স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনের তারিখ এখনও চূড়ান্ত না হলেও ফেব্রুয়ারিতে সম্মেলন অনেকটাই নিশ্চিত বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
তারা আরও জানান, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সম্মেলনে তারিখ দেওয়া হতে পারে।
এ বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে আলোচনায় রয়েছে। আগামী ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভার আলোচনার মূল বিষয় দলের জাতীয় সম্মেলন। ওইদিনই সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে বলে ওই নেতারা জানান।
তবে কার্যনির্বাহী সংসদের সভার আগে দলের নেতারা সম্মেলনের তারিখের বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাচ্ছেন না। সভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সুবিধাজনক একটি তারিখ চূড়ান্ত করবেন।
সামনে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে সবচেয়ে বড় স্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই নির্বাচনী আবহাওয়া তৈরির আগেই জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে পৌরসভা নির্বাচনের কারণে গত ডিসেম্বরে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পরপর দলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে সর্ব স্তরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। দলটির সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সে হিসাবে, গত ডিসেম্বরে সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সে লক্ষ্যে অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক সভায় ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। কিন্তু পৌর নির্বাচনের কারণে সম্মেলন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে দলীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে যেসব জেলায় সম্মেলন বাকি রয়েছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে নতুন কমিটি গঠন এবং যে জেলাগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি সে জায়গাগুলোতে কমিটি করে ফেলা হবে।
আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলন দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। একইসঙ্গে দলের কোনো কোনো পদে পরিবর্তন এবং কমিটিতে সদস্য সংখ্যাও বাড়তে পারে। গঠনতন্ত্রেও নতুন নীতি সংযোজন হতে পারে।
সম্মেলনের সময় এগিয়ে আসায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবার কারও কারও মধ্যে এক ধরনের আতঙ্কও কাজ করছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলের বর্তমান ৭৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী সংসদের (কেন্দ্রীয় কমিটির) সদস্য সংখ্যা বাড়তে পারে। সদস্য সংখ্যা বাড়লে গত কয়েক বছরে যারা ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের অনেকেই আশা করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়ার।
আবার সাংগঠনিক ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন কারণে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি আছে, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন এমন কেউ কেউ এবার বাদ পড়তে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এ ধরনের আশঙ্কা থেকে কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে আতঙ্কে রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে এবং দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বিষয়েও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সংযোজন আসবে। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে এখনও দলের কার্যনির্বাহী সংসদে আলোচনা হয়নি।