ফার্মাসিস্ট লাইসেন্স পেয়েও খুলনায় পথে পথে ঘুরছেন ২২৯ শিক্ষার্থী 

দৈনিক বাংলাভূমি ডেস্ক:

বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের পোহাতে হচ্ছে ফার্মেসি কাউন্সিলের ২২৯ জন শিক্ষার্থীকে। প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও এখনো তারা হাতে পাননি বই। এমনকি ক্লাসও শুরু হয়নি। অথচ দেশের অন্য ৬৩টি জেলায় বই পেয়ে ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা। খুলনার ২২৯ জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করেও এখন পথে পথে ঘুরছেন। ইতোমধ্যে তারা খুলনার জেলা প্রশাসক ও ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু ওই দুটি দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের বিষয়। তবে খুলনার জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, বিসিডিএস নেতাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায় কিনা তা পর্যালোচনা করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের আওতাধীন ৬৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকারের ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের ৬৩তম ব্যাচে খুলনা জেলার ছাত্রছাত্রীরা গত এপ্রিল মাসে অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে পাঁচ হাজার টাকার বেশি জমা দিয়ে ভর্তি হয়েছেন।

তারা উল্লেখ করেন, বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য ওষুধ ব্যবসার সাথে জড়িত হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রায় দুই বছর অপেক্ষার পর বহু কাঙ্ক্ষিত এই কোর্সে ভর্তি হয়েছেন তারা। বৈধভাবে ওষুধ ব্যবসা করার জন্য এ কোর্সটি বাধ্যতামূলক এবং এই কোর্স ছাড়া ওষুধ ব্যবসা পরিচালনার জন্য আবেদন করা যাবে না।

কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে এই কোর্সের ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে খুলনায় কোনো ক্লাস হচ্ছে না। এ ছাড়া কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের ফলে প্রায় ৫-৬ মাস যাবত খুলনার বিসিডিএস অফিসে তালাবদ্ধ ও সিলগালা করা রয়েছে। বিসিডিএসএর কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের কেন শিক্ষার্থীরা বহন করবে এমন প্রশ্নও তোলেন তারা।

এ ব্যাপারে খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, বিষয়টি যদিও বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের, তবুও তিনি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে বসবেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেওয়া আবেদনপত্রটি তিনি ফার্মেসি কাউন্সিলের পাঠিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মহেশ্বর কুমার মণ্ডল বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তার দপ্তরে একটি আবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি তাদের আওতাধীন নয়। এজন্য তিনি এটি ঔষধ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সেখান থেকে ফার্মেসি কাউন্সিলকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলে হয়তো কিছু একটা হতে পারে।

বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও খুলনা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি এসএম কবির উদ্দিন বাবলু বলেন, বিসিডিএস বরাবরের মতো এবারও ফার্মেসি কাউন্সিলকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ ও ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। যেহেতু একটি কু-চক্রীমহলের চক্রান্তের কারণে বিসিডিএসর খুলনা অফিস তালাবদ্ধ সেহেতু তারা বিকল্প হিসেবে খালিশপুরের একটি স্কুলে ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তা ছাড়া তিনি নিজে যেহেতু সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন, সেহেতু জেলা কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন মিলন খুলনার ফার্মেসি কাউন্সিলের বই বিতরণ ও ক্লাসের দায়িত্বরত ছিলেন। কিন্তু সেখানেও কু-চক্রীমহলটি বাধা দেয় এবং এর ফলে ক্লাস বন্ধ রয়েছে।

এরপরও শিক্ষার্থীদের অনুরোধের কারণে তিনি বিসিডিএসএর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির সাথে আলোচনা করে তাদের বই দেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেখানেও বাধা আসায় তা আবার বন্ধ করতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ফার্মেসি কাউন্সিলের সচিবের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু সেখান থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

মো. নিজাম উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, যদি খুলনায় ক্লাস করানো সম্ভব না হয় তাহলে পার্শ্ববর্তী কোনো জেলার সাথে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। তা না হলে তারা পিছিয়ে পড়বেন।

শেয়ার করুন

Related News

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫