বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
প্রবাসী বাংলাদেশিরা সব জায়গায় অবজ্ঞা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কেনই বা এমনটা হয়? প্রবাসীরা বাংলাদেশের জন্য কিনা করে। দেশের মোট জাতীয় আয়ের প্রায় ১৫ শতাংশই প্রবাসীদের অবদান। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এদের সক্রিয় অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কমে গেলে বাংলাদেশে হাহাকার লেগে যায়। অর্থনীতিতে চরম নেতিবাচক অবস্থা সৃষ্টি হয়।
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করে আজ সবার প্রিয় হয়ে ওঠেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে বলেও জানান নিক্সন চৌধুরী।
প্রবাসীদের সুবিধা-অসুবিধা এবং তাদের জন্য রাজপথে লড়াইয়ের কথা জানিয়েছে নিক্সন চৌধুরী। দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসীদের ভিআইপি আইডি কার্ড প্রদান ও এয়ারপোর্টের হয়রানিসহ নানা সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন এ তরুণ নেতা।
তিনি জাতীয় সংসদসহ টেলিভিশনে প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছেন ও নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসীদের নিয়ে করণীয় ও রাজপথে নামার বিষয়ে কথা হয় জাগো নিউজের ওমান প্রতিনিধি বাইজিদ আল-হাসানের সঙ্গে।
প্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের কাছে আমি দাবি জানিয়েছি সব প্রবাসীদের ভিআইপি আইডি কার্ড করে দেয়ার জন্য। দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এয়ারপোর্টের হয়রানি অনেকটা কমেছে। এরপরও আমি কর্তৃপক্ষকে বলবো ‘কোনো প্রবাসীকে যেন নিরাপত্তার নামে তল্লাশি না করা হয়।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও এলাকায় দুই দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া এলাকার লোকজন আপনাকে খুব ভালোবাসে- কারণ জানতে চাইলে নিক্সন বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব রয়েছে। আমি যদি মানুষের সেবাই না করতে পারি, তাহলে আমার ক্ষমতা দেখানোর জন্য এমপি হয়ে কোনো লাভ নেই।’
‘ক্ষমতার জন্য এমপি হইনি, আমার এলাকার জনগণের সেবা করাই আমার মূল লক্ষ্য। জনগণের বিপদে-আপদে সবসময় পাশে থাকতে চাই।’
খুব অল্প সময়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন দেশে-বিদেশে, পাশাপাশি আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীও রয়েছে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এতকিছুর পরও কোনো প্রটোকল ছাড়াই চলাফেরা করেন। হুমকি আসে কি?
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমার প্রটোকল জনগণ, মৃত্যুর ভয়ে পুলিশের প্রটোকল দিয়ে কেউ বাঁচতে পারেনি। আর আমার যারা প্রতিদ্বন্দ্বী তারা সবাই আমার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সুতরাং আমি যদি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে না পারি, তাহলে বেঁচে থেকে লাভ কি? যতদিন বাঁচবো মানুষের জন্য কাজ করেই। যা হয় হবে।’
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে অনেক অভিযোগ শোনা যায়। কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়া, দালালদের দৌরাত্ম, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও নানা অনিয়ম এবং হাসপাতালের মূল গেটের পাশেই রয়েছে একটা ময়লা আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। এ নিয়ে কি ভাবছেন?
‘ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সবসময় আমার নিজস্ব লোকজন থাকে। স্বাস্থ্যসেবা নিতে হাসপাতালে গিয়ে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয় সেগুলো দেখাশোনা করার জন্য।’
‘শুধু ফরিদপুর নয় চিকিৎসা করাতে ঢাকায়ও যদি আমার এলাকার কেউ আসে তাহলে আমি নিজের লোক দিয়ে তাদের সবধরনের সহযোগিতা করি। আর দালালদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছি, কিছুদিন আগেও বেশকিছু দালাল গ্রেফতার করা হয়েছে।’
‘ময়লা আবর্জনার স্তূপের বিষয়টা আমি খেয়াল করিনি। তবে এটা অবশ্যই এখান থেকে সরানো উচিৎ বলে আমি মনে করি। আমি ডিসিকে অনুরোধ করবো এটা সরানোর জন্য। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ, সুতরাং তিনি কখনোই এমন অনিয়ম মেনে নেবে না। আর ফুটওভার ব্রিজ অবশ্যই দরকার, এই বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো বলে আশ্বাস দেন।’
‘এ ছাড়া ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্স চালু করবো। প্রবাসীদের জন্য ট্রাভেল ট্যাক্স বন্ধ করার ব্যাপারে সংসদে তুলে ধরবো। প্রবাসীদের বিনা হয়রানিতে এবং দ্রুত সময়ে ভোটার আইডি দেয়ার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
‘আমার এলাকা থেকে কোনো একজন মানুষ যেন অদক্ষ হয়ে প্রবাসে না যায়, সেইজন্য একটা স্কিল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা আছে। যেখান থেকে একজন মানুষ কাজের দক্ষতা অর্জন করে বিদেশ গিয়ে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে।’
মনে রাখতে হবে দেশের অর্থনীতির যেসব খাত নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি, তার একটি হচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। দেশের প্রতি টান ও ভালোবাসা সবারই থাকে। কিন্তু প্রবাসীরা সেই টান-ভালোবাসা, পরিবার-পরিজনের মায়া ত্যাগ করে পাড়ি দেন বিদেশে।
একটু ভালো উপার্জনের আশায় তারা বছরের পর বছর বিদেশে পড়ে থাকেন। তাদের উপার্জনের ওপর নির্ভর করে দেশে থাকা পরিবারের ভরণপোষণ। শুধু তাই নয়, আমাদের আকাশচুম্বী চাওয়া-পাওয়ার অনেকটাই নির্ভর করে প্রবাসীদের ওপর ভরসা করে। তারা সাধ্যমতো হাসিমুখে তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে যান পরিবার ও দেশকে। সূত্রঃ জাগোনিউজ