শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > ভ্যারাইটিজ > প্রায় বিলুপ্ত আম্বোইরা খালের নামই ভুলে গিয়েছিল এলাকাবাসী

প্রায় বিলুপ্ত আম্বোইরা খালের নামই ভুলে গিয়েছিল এলাকাবাসী

শেয়ার করুন


সাদিকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টারঃ
মাত্র এক যুগ আগেও চলত নৌকা, ফলের মৌসুমে নৌকা বোঝাই করে ফল নিয়ে শহরে যেতো ব্যাপারীরা। সেই শাখা নদী বা খালের নামটাই বলতে পারেনি এলাকার বেশির ভাগ তরুণ ও যুবক। একজন শতবর্ষী প্রবীণ মানুষের কাছে জানা যায়, নাম তার “আম্বোইরা খাল”। এলাকাবাসীকে জলাশয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে তাদের নদীর কথা শুনাতে চমৎকার একটি “নদী আড্ডা” আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সদর উপজেলা শাখা। সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ঐ আড্ডায় যোগ দেয় শ্রীপুর কমিটির নদী যোদ্ধাসহ গাজীপুরের প্রকৃতি প্রেমী বেশ কিছু মানুষ।
গাজীপুর জেলার সদর ও শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম উত্তর সীমানা নির্ধারণী এই খালটি সালদহ থেকে উৎপন্ন হয়ে শালবনের ভিতর দিয়ে চলে গেছে প্রায় ৬ কিলোমিটারের পথ। এটি ওই এলাকার কৃষি কাজের একমাত্র অবলম্বন, যা খরার মৌসুমে পানির অভাবে থাকে শুষ্ক। অপরিকল্পিত একটি ব্রীজের কারণে বন্ধ হয়েছে নৌচলাচল। খননের অভাব, প্রভাবশালীদের কুপ্রভাবে আংশিক ভরাট সহ নানা সমস্যায় অবহেলিত নদীটি। শতবর্ষী বিশালাকার বটগাছ যেন অভিভাবকের মত দাঁড়িয়ে আছে নদীর তীরে। এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ এই গাছে নিচে করেন প‚জার্চণা। বর্ষায় মিস্টি পানিতে টইটুম্বুর, যেন সদা হাস্যোজ্জ্বল। নৈসর্গিক সৌন্দর্য বেষ্টিত এ খালকে কেন্দ্র করে আশেপাশে শালবনের পশু-পাখি এক ভিন্ন জীব-বৈচিত্র সাজিয়ে নিয়েছে। কথা সাহিত্যিক ” হুমায়ুন আহমেদ” এর “নুহাশ পল্লী” ঘেঁষে বয়ে গেছে নদীটি। আগে দর্শণার্থীরা নৌকা নিয়ে নুহাশ পল্লীর নদীর ঘাটে পৌঁছতে পারতেন, নিচু ব্রীজ হওয়ার পর সেটাও বন্ধ হয়েছে। এখনো সুস্বাদু মাছ আর জলজ প্রাণীদের খেলা দেখা যায় খালটিতে। প্রশাসনের একটি সুদৃষ্টি পেলে হয়তো খালটি বেঁচে যেতো বিলুপ্তির পথ থেকে। সুন্দর ও সাবলিল এ জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণে প্রয়োজন খাল খনন, সিমানা নির্ধারণ এবং ফোরশোরের দখল উচ্ছেদ অভিজান। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রশাসনিক কোন দৃশ্যত উদ্যোগ তারা দেখতে পাননি।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহান শাহাবুদ্দিন, সফি কামাল, জয়নাল আবেদীনের মত প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক। ছিলেন কলামিস্ট সাঈদ চৌধুরী, খুরশেদ আলম, সংগঠক কে.এম. জাহিদুল ইসলাম, রাইসুল ইসলাম, টিএইচকে স্বপন, কামাল হোসাইন এর মত নিবেদিত প্রাণ পরিবেশ কর্মী। ছিলেন যায়যায়দিন প্রতিনিধি আইয়ুব খাঁন, ভোরের ডাক প্রতিনিধি রাসেল শেখ মত গুনি সাংবাদিক। গিটার হাতে নদীর গান শুনিয়েছেন সাজাদুর রহমান। এছাড়াও ছিল স্থানীয় বর্মন সমাজের কর্ণধার সঞ্জিত বর্মণ, উদার প্রাণ সোহেল বর্মণ সহ বেশ কিছু প্রবীন ও তরুণ প্রাণের উপস্থিতি।
মুক্ত আলোচনায় তারা বলেন, কিছু অসাধু ও অসচেতন মানুষ শাখা নদীর মোহনার ফোরশোরে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। কেউ খালের তীর কেটে করে নিয়েছে তার মৎস খামারের অংশ। খালটি বাঁচলেই বেঁচে যাবে এ এলাকার কৃষি। অপরিকল্পিত ব্রীজটি সংষ্কার কিংবা পরিবর্তন ও খাল খননের অনুরোধ জানান তারা।