স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা : প্রহসন জেনেও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনবিমুখ দল নয়। আমরা নির্বাচন করব, করতে চাই। তবে সেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পরবর্তী সব নির্বাচনে চরম অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশে ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসন মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মাহবুব। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমির ১৪তম বর্ষপূতি উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ভারতের নির্বাচন কাঠামোর প্রসঙ্গ টেনে জেনারেল মাহবুব বলেন, ‘নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি শক্তিশালী থাকেন। কিন্তু আমাদের দেশের নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী নয়। সিইসিকে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে হবে।’
উচ্চ আদালতে গৃহযুদ্ধ চলছে- অভিযোগ করে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উচ্চ আদালত অঙ্গনে এখন একে অপরের পেছনে কথা বলছে। সেখানে মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের মঞ্চায়ন হচ্ছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী বলেছেন ‘বিচার বিভাগ ধ্বংসের ধারপ্রান্তে’। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা, এটাকে সাধারণভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএনপির আসন্ন ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। অচিরেই ভেন্যু সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এ কাউন্সিলের মাধ্যমে ত্যাগী, সৎ ও স্বচ্ছ চরিত্রের সত্যিকারের জিয়ার সৈনিকেরা নেতৃত্বে আসবেন। নতুন নেতৃত্ব গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জঙ্গিবাদসহ সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।’
দুর্নীতিতে জলপ্রপাত চলছে- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে যত বড় অবস্থানে আছে, সে তত বেশি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ভাষার মাসে এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলা ভাষা এখনো সর্বক্ষেত্রে চালু হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখের কথা। বিচার বিভাগেও এখনো বাংলা ভাষা প্রবেশ করতে পারেনি। রায় এখনও ইংরেজিতে লেখা হয়। এটা লজ্জার কথা। বিচার বিভাগের জন্যও এটা লজ্জার।’
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় পরিচয় মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। জাতীয় পরিচয় মুছে গেলে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তাই সাংস্কৃতিক আগ্রাসন মোকাবেলায় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ূন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এবং জসীম উদ্দিন মজুমদারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।