স্টাপ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে তিনদিনের রিমান্ডে না দিয়ে প্রথম দিনই জামিন দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী, পঙ্গু ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রথম দিনই জামিনের আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুল করেই হোক আর যেভাবেই হোক, সেটি না করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে আইন মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
যদি কোনো আইনজীবী সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেন, তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবীর না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত রি-থিংক (পুনর্বিবেচনা) করার আহবান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে প্রত্যেকের আইনগত সহায়তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের রিমান্ড ও গ্রেফতার বিষয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যদি বিচার বিভাগের কাজ হয়ে থাকে, আমি কিছু বলতে পারবো না। তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন।
তারা (আদালত) তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছিলেন, আমি জানি না। আমি আইনে শিখেছি যে, যদি এমন কোনো অসুস্থতা থাকে, তার কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ ব্যহত হয়, সে ক্ষেত্রে প্রবীর সিকদারকে প্রথম দিনই জামিন দেওয়া উচিত ছিল। এখন সেটা প্রথম দিন দেওয়া হয়নি। ভুলবশতই হোক আর যে কারণেই হোক, তাহলে ভুলটা ঠিক করা উচিত। তবে তাকে তো জামিন দেওয়া হয়েছে। এখন তো আর এটা নিয়ে কথা বলার দরকার নেই।
আইনজীবীরা একজোট হয়ে প্রবীর সিকদারের পক্ষে দাঁড়াননি এ বিষয়ে আপনার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আছে কি-না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমার এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। এটা নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কি করতে পারে সেটা আলাদা কথা। আমার দিক থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।
বার কাউন্সিল এমন আইন রাখতে পারে কি-না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে আছে, প্রত্যেক ব্যক্তির আইনের সহায়তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা আছে- ‘আইনের আশ্রয় লাভ এবং আইন অনুযায়ীও কেবল আইন অনুযায়ী ব্যবহার লাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইন অনুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম, বা সম্পত্তির হানি ঘটে’।
সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, তার (প্রবীর সিকদার) যদি এমন কোনো অসুস্থতা থাকে তার কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা কাজ ব্যহত হয়, সেই ক্ষেত্রে প্রবীর সিকদারকে প্রথম দিনই জামিন দেওয়া উচিত ছিল।
আইনমন্ত্রী হিসেবে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি কোনো যুদ্ধাপরাধীকে আইনের সহায়তা না দেওয়া হয়, তাহলে আপনারা বাহবা দেন। আবার আজকে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেলো একজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে। আমি ডাবল স্টান্ডার্ডের পক্ষের নই।
আমি যখন একজন আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি, আমি যদি মনে করি, আমার নীতির কোনো বৈপরীত্য হচ্ছে না, তাহলে আইনজীবী হিসেবে ডিফেন্ড করবো।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনি সহায়তার ব্যাপারটা হচ্ছে এ রকম- যেই অপরাধে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, আর তার পক্ষে যদি কোনো আইনজীবী না থাকেন, তাহলে রাষ্ট্র তার পক্ষে আইনজীবী দেবে।
আইনমন্ত্রী প্রবীর সিকদারের পক্ষে আইনজীবী না দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বলেন, আমার মনে হয়, ‘বিষয়টি রি-থিংক’ করা উচিত।
আইনজীবী হিসেবে আমি আহবান জানাবো, তারা যেনো রি-থিংক করেন। আমাদের কাছে মানুষ আসবে, আমরা যদি এমন একটা কঠোর কথা বলে ফেলি তাহলে সমাজে সেভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমার মনে হয়, বার অ্যাসোসিয়েশনের রি-থিংক করা উচিত।
আইসিটি অ্যক্টের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করলে আইনমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আইসিটি মন্ত্রণালয় আছে, তারা বলবে।
মন্ত্রণালয় আছে, তারা বলবে।ৃ