শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পেঁয়াজের কেজি ৯০, সেঞ্চুরি হাঁকানোর আশঙ্কা!

পেঁয়াজের কেজি ৯০, সেঞ্চুরি হাঁকানোর আশঙ্কা!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: শনিবার (২২ আগস্ট) অনেকে ৮০ টাকা দরে কিনেছেন দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ। এই ঝাঁজে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন ক্রেতারা। অথচ হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দাম এখন ৯০ টাকা!

খুচরা বিক্রেতাদের মতে দ্রুত সময়ে সেঞ্চুরি হাঁকতে পারে পেঁয়াজের দাম।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আশরাফ উদ্দিন লিটন পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে তা বলতে পারবো না। দাম বাড়ার কারণ শ্যামবাজারের পাইকাররা জানেন। শুনেছি ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণেই দাম বাড়তি।

শ্যামবাজারের পাইকারদের উদ্ধৃতি দিয়ে লিটন বলেন, খুব দ্রুত সময়ে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। তখন আমাদের ১০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হবে।’

খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা লিটনের কথামতো দাম বাড়ার কারণ জানতে ছুটে গেলাম শ্যামবাজারে। এখানে প্রতিকেজি দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ শনিবার শ্যামবাজারে পাইকারি দামে প্রতিকেজি দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।

শ্যামবাজারের পাইকাররা জানান, ভারত থেকে হঠাৎ করেই পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশি বাজারে। দেশের অন্যতম পাইকারি পেঁয়াজের হাট ফরিদপুর, পাবনা ও রাজবাড়ীতেও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। শনিবার এসব হাটে ৪০ কেজি পেঁয়াজ ২ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। অথচ একদিনের ব্যবধানে তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকায়।

বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে শ্যামবাজারের অন্যতম আড়ৎ রাজ ট্রেডিংয়ে। এই আড়তের মালিক হাজী মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ করেই ভারতের পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। যে কারণে পেঁয়াজের শঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় দেশি মজুদদারও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। শনিবার দেশি মোকামে ৪০ কেজি পেঁয়াজ ২৪শ’ টাকায় কিনেছি অথচ আজকে সেই পেঁয়াজ ৩২’শ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’

পেঁয়াজের দামের তারতম্য দেখা যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন ঘুরে। যেসব খুচরা বিক্রেতারা রোববার (২৩ আগস্ট) পেঁয়াজ কিনেছেন তারা ৯০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। অন্যদিকে যারা বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার পেঁয়াজ কিনেছেন তারা একটু কম দামে বিক্রি করতে পারছেন।

যেমন মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারে অনেক বিক্রেতা ৮৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। এসব খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি বাজার থেকে বৃহস্পতি ও শুক্রবার পেঁয়াজ কিনেছেন।

নিউমার্কেটের পেঁয়াজ বিক্রেতা কবিরুল ইসলাম দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি প্রসঙ্গে সুমন বলেন, আজকে (রোববার) পেঁয়াজের দামমে আগুন। তাই ৯০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। তবে অনেকে দুই দিন আগের পেঁয়াজ কেনায় ৫ টাকা কমে বিক্রি করছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) জানিয়েছে পেঁয়াজের বাড়তি দামের কথা। টিসিবি জানায়, রোববার প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা দরে।

অথচ রমজান মাসে ভারতীয় ও দেশি পেঁয়াজ ৩৬-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এক মাসের ব্যবধানে দ্বিগুনের বেশি দাম।

ভারতীয় আমদানি রেট বৃদ্ধিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ বলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয় বলছে পেঁয়াজের দাম অল্প সময়ের মধ্যে কমে আসবে।

এই প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন (এন.ডি.সি) বাংলানিউজকে বলেন, একমাসে ভারত পাঁচগুন আমদানি রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে বাজারে পেঁয়াজের দামে হঠাৎ করে প্রভাব পড়েছে। গতকাল (শনিবার) ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি রেট ছিল ৬০-৬৫ টাকা আজকে যেটা হয়েছে ৭০-৮০ টাকা।’

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, পেঁয়াজের দাম দ্রুত সময়ে কমে আসবে কারণ আমাদের দেশি পেঁয়াজ পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রয়েছে। পেঁয়াজ পঁচনশীল পণ্য। তাই কেউ এটি ধরে রাখতে পারবে না।’ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম