শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পিকনিকের বাস খাদে, প্রাণ গেলো ৭ শিশুর

পিকনিকের বাস খাদে, প্রাণ গেলো ৭ শিশুর

শেয়ার করুন

জেলা প্রতিনিধি, যশোর ॥ যশোরে পিকনিকের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে সাত শিশু শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক শিশু। এতে বেনাপোলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আহতের চিকিৎসার তদারকি করছেন।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌগাছার ঝাউতলায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- আখি (১১), সাব্বির (৮), সুরাইয়া (৮), শান্ত (৬), মিথিলা (৭), শাহানারা (৯) ও আকিল হোসেন (৭)। এরা সবাই বেনাপোলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের বাড়ি বেনাপোলের নামাজগ্রাম ও গাজীপুর গ্রামে।

বেনাপোলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন জানান, সকালে রাজশাহী মেট্রো-জ- ১১-০০৮০ নাম্বারের একটি বাসে ৫২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগরে পিকনিকে যায়। সারাদিন কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে চৌগাছার ঝাউতলায় পৌঁছালে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। এতে ৩ জন মেয়ে ও ৪ জন ছেলে শিক্ষার্থী মারা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের ঝাউতলায় স্থানীয় লোকজন রাস্তায় শাকসবজি থেকে বীজ সংগ্রহ শেষে ডাটা ফেলে রাখেন। সন্ধ্যা সামান্য বৃষ্টি হলে ওই স্থানটি পিচ্ছিল হয়। শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসটি শাকের ডাটার ওপর এলে পিছলে যায়। এসময় ড্রাইভার নিয়ন্ত্রণ হারালে পুকুরে পড়ে যায়। এসময় পানিতে ডুবে মারা যায় ৭ শিক্ষার্থী। আহত হয় আরও ৪৫ জন।

আহতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাদের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মারাত্মক আহতের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এদিকে ৭ শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরে বেনাপোলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনদিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বেনাপোল পৌরসভা। অপরদিকে এ মর্মান্তিক খবর শুনে শত শত লোক ছুটে যান ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে। পুলিশের পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয় জনসাধারণ।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রেশমা শারমীন জানান, আহতের চিকিৎসার সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। মারাত্মক আহতের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি উদ্ধার চেষ্টাও করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীদের নিহত হওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। ২০১১ সালের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত হয় ৪৪ জন স্কুলছাত্র। এর মধ্যে ৩৩ জনই ছিল স্থানীয় আবু তোরাব হাই স্কুলের ছাত্র। বাকিরা আশপাশের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থী। ওইদিনে ছেলের মৃত্যু শোকে মারা যান এক বাবাও। ওইদিন সহপাঠিদের কান্নায় গোটা দেশে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক ঘোষণা করা হয়।
বাংলামেইল২৪ডটকম