শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পাসপোর্ট-ভিসা কন্স্যুলার নিয়োগে অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা!

পাসপোর্ট-ভিসা কন্স্যুলার নিয়োগে অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে, বিদেশে বাংলাদেশের ১০টি মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত কন্স্যুলার সেবা দিতে ১০টি প্রথম সচিবের পদ মঞ্জুরি দেওয়া হয়।

এ নিয়ে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি, মহাপরিচালকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে ৫০ শতাংশ পদে অধিদফতরের লোক নিয়োগ করার জন্য।

তাদের দাবি, অধিদফতরের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বাদ দিয়ে অন্য কাউকে এ সেবায় সম্পৃক্ত করা হলে পাসপোর্ট ও ভিসা সেবার মান কমে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সারসংক্ষেপ এবং বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের তথ্যমতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শর্ত না মেনেই পাসপোর্ট-ভিসা কাজে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনভিজ্ঞ ১০ জন সিনিয়র সহকারী সচিব নিয়োগ করা হচ্ছে। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ নিয়েগের মঞ্জুরি দেওয়া হয় ২০১৪ সালের ১৭ জুন।

মঞ্জুরিপত্র অনুযায়ী, সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবি, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, ওমানের মাসকাট, কাতারের দোহা এবং কুয়েত, সিঙ্গাপুর, রোম ও ইতালিতে প্রথম সচিব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত্র কন্স্যুলার সেবার জন্য।

যদিও প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সারসংক্ষেপে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যক্রম সম্পাদনে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ওই সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছিলেন ২০১২ সালের জুন মাসে।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত সারসংক্ষেপে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী, ২০১৫ সালের মধ্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

এছাড়া বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং ধর্মীয়সহ নানা কারণে বাংলাদেশি মিশনে কাজের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের ৪৭টি দেশে ৬০টি মিশন রয়েছে বাংলাদেশের। আরো ছয়টি মিশন প্রক্রিয়াধীন। ক্রমবর্ধমান জনশক্তি রফতানি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের স্বার্থে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।

বর্তমানে বিদেশি মিশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কূটনৈতিক দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পাসপোর্ট ও ভিসা প্রদানের দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে, দূতাবাসগুলো ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলা করতে পারছে না। এতে প্রবাসে এ দেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি এবং বিদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদানে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।

সারসংক্ষেপ বলা হয়, পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম একটি বিশেষায়িত কাজ। দেশের অভ্যন্তরে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এই দায়িত্ব পালন করে আসছে। আর বাংলাদেশের বিদেশি মিশনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশি মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা দ্রুত সম্পাদনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ জরুরি।

পর্যায়ক্রমে ৬৬ দেশের মিশনে ৩৬৬টি পদ সৃজনের অনুরোধ জানানো হয়, এ সারসংক্ষেপে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সারসংক্ষেপ অনুমোদনের দুই বছরের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালের জুন মাসে জনবল বৃদ্ধির মঞ্জুরি দেয়। প্রথমে মাত্র ১০টি প্রথম সচিবের পদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবদের নিয়োগ মঞ্জুরি দেওয়া হয়, সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবি, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, ওমানের মাসকাট, কাতারের দোহা, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, রোম এবং ইতালিতে।

মঞ্জরিপত্রে বলা হয়, প্রথম সচিবের পদগুলো সিনিয়র সহকারী সচিব দিয়ে পূরণযোগ্য এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

এ মঞ্জরির পর বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. ফজলুল হক মহাপরিচলকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এ মঞ্জুরির বিষয়ে। মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গত ৭ সেপ্টেম্বর লিখিত আবেদন করেন।

লিখিত আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ শতাংশ এবং বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে ৫০ শতাংশ পদ পূরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর।

লিখিত আবেদনে বলা হয়, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের ২১ জন কর্মকর্তা প্রথম সচিব পদমর্যাদায় পদস্থ রয়েছেন। তাই, অধিদফতরের কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে এ সেবা প্রদানে সম্পৃক্ত করা হলে পাসপোর্ট সেবার মান ব্যাহত হবে। আবেদনে জারি করা মঞ্জুরি পত্রের ‘চ’ স্মারক সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

‘চ’ স্মারকে সাংগঠনিক কাঠামোর কথা উল্লেখ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, অধিদফতরে অভিজ্ঞ লোকবল থাকতেও অনভিজ্ঞ লোকজন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এতে পাসপোর্ট ও ভিসার কাজ দ্রুততম সময়ে সম্ভব হবে না। আর এমআরপি এবং এমআরভি প্রকল্প নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। কারণ, ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়ার কাজ সম্পাদন করা অনেক কঠিন। আর বিদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগবে। মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম