বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ বগুড়া: বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় যতোই দিন গড়াচ্ছে, ততোই যেন নিচে চলে যাচ্ছে পানির স্তর। অকেজো হওয়ার উপক্রম হয়েছে উপজেলার এক হাজারেরও বেশি টিউবওয়েল (নলকূপ)। এসব টিউবওয়েলে পর্যাপ্ত পানি না ওঠায় চরম দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন উপজেলার কমপক্ষে ৫ হাজারেরও বেশি পরিবার। প্রচণ্ড খরতাপ, ভ্যাপসা গরম ও পানি সংকটে নেমে এসেছে অসহনীয় দুর্ভোগ।
রোববার উপেজলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
উপজেলার আমড়া গোহাইল, কৈগাড়ি, হরিহারা, জামালপুর, ভাটরা, বাদলাশন, নিশিন্দারা, চাঙ্গুইর, তৈয়বপুর, বাঁশো, রিধইল, ধাওশ, সিধইল, মির্জাপুর, ভাটগ্রাম, বীরপলি, মাজগ্রাম, কাথম, ধুন্দার, বিজরুল, আমগাছি, মথুরাপুর, গোছইন, দুর্জয়পুর, ইসুবপুর, ডেরাহার, চাকলমা, পৌর শহরের কচুগাড়ি, পূর্বপাড়া, ওমরপুর, দক্ষিণপাড়া, রহমাননগর, পশ্চিমপাড়া, হিন্দুপাড়া ও ডাকনিতলাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, টিউবয়েলে পানি না ওঠার কারণে পুকুরের পানি দিয়েই চলছে হাজারও মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। হঠাৎ দু-একটি বাড়িতে ভ্যাটিক্যালযুক্ত টিউবয়েল থাকলেও সেখানে একটু পানি নেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে উপচেপড়া ভিড় জমাচ্ছেন গৃহবধূরা। সামর্থবান অনেকে আবার টিউবয়েলে পানি পেয়ে সাব-মারসিবল পাম্পের মাধ্যমে পানি তোলার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু সেখানেও দেখা গেছে লম্বা লাইন।
পৌর এলাকার বিলকিছ বেগম, নাজমা বেগম, আইয়ুব আলী, আবুল হোসেন, আবু বক্কর, সাইদুল ইসলাম, ইয়াছিন, রেজাউল করিম, নিমাই চন্দ্র, সুজিত চন্দ্র, গৌতম চন্দ্র, ভ্যানচালক আবুল কালাম ও কৃষক গিয়াস উদ্দিনসহ অন্যরা বাংলানিউজকে জানান, পানির অপর নাম জীবন, সেই জীবনের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। তা-না হলে আমরা অল্প আয়ের মানুষ কেমন করে বাঁচবো? আমাদের তো ভ্যাটিক্যাল বসানোর টাকা নেই।
নন্দীগ্রাম পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার শান্ত এবং বুরইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা পানি সমস্যার কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, একটি পৌরসভা ও বুরইল, নন্দীগ্রাম সদর, ভাটরা, থালতামাধগ্রাম, ভাটগ্রামসহ ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা গঠিত। পৌরসভাসহ কম-বেশি সব কয়েকটি ইউনিয়নেই পানি সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা প্রায় প্রতিদিনই নলকূপ থেকে পানি ওঠানোর জন্য নতুন করে মাটি খোড়াসহ নানা কৌশল অবলম্বন করেছে। তবুও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। তবে কিছু কিছু এলাকায় ভ্যাটিক্যালযুক্ত নলকূপে সামান্য কিছু টিউবওয়েলে পানি উঠলেও হাজারেরও বেশি টিউবয়েলে একে বারেই পানি উঠছে না। যে কারণে ক্রমান্বয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে এলাকায়।
নন্দীগ্রাম উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মকবুল হোসেন খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিউবওয়েল বসানোর আগে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি পেতেন। তাহলে এখন ভূক্তভোগীদের কি করণীয় প্রশ্ন করা হলে তিনি অনাগ্রহের সঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্যের কিছু করণীয় নেই। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা চেষ্টা করলে নতুন করে টিউবওয়েল বসিয়ে এর সমাধান করা সম্ভব। বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম