শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > খেলা > পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজ: তামিমকে নিয়ে এত আলোচনা কেন?

পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজ: তামিমকে নিয়ে এত আলোচনা কেন?

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥
‘একা তামিম ইকবালকে কোনোভাবেই দায় দেয়া যায় না। বাকিরাও তো তেমন ব্যাট করতে পারেননি। তারা যদি ভালো খেলত; সে ক্ষেত্রে তাকে দোষ দেয়া যেত। এমন বক্তব্য বাংলাদেশের একজন ক্রিকেট ভক্ত তাবাসসুমের।

তবে সবাই তার মতো করে ভাবছে না। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে রান তুলেছে ১৪১, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩৭। যেখানে প্রথম ম্যাচে তামিম ৩৪ বলে করেন ৩৯ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৩ বলে সংগ্রহ করেন ৬৫ রান।

যেমন ক্রিকেট ভক্ত অরভিন হোসেন অনিক মনে করেন, তামিম যতই ধীরে খেলুক না কেন, একদিন ৩০ বলে ৫০ করলেই সবাই ভুলে যাবে। কারণ বাংলাদেশের ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটাররা ম্যানেজমেন্টে প্রভাব ফেলে।

দেশের ক্রিকেট ভক্তদের একটি অংশের অভিযোগ, যখন পাওয়ার প্লে চলছে, তখন তামিমের ধীরগতির ব্যাটিং; অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যান তো বটেই ইনিংসের বাকি সময় রান তোলার জন্য অন্য ব্যাটসম্যানদের ওপর একটা চাপ তৈরি করে।

প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৬ ওভারে ৩৫ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩। অর্থাৎ দুই ম্যাচেই বাকি ১৪ ওভারে ১০০’র কিছুটা বেশি রান করতে সমর্থ হযন টাইগাররা। এ দুই ম্যাচেই তামিম রানআউট হন, যখন তিনি উইকেটে সেট হয়ে যান।

তামিম এখন আলোচনার কেন্দ্রে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ১০৪ রান করা এ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে পক্ষে এবং বিপক্ষে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যে সিরিজে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তামিম।

বিশ্লেষক ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ম্যাচ জেতার জন্য যে স্ট্রাইক রেট প্রয়োজন, সেটার তুলনায় তামিমের স্ট্রাইক রেট কম। সেটিতে সামগ্রিক স্কোরের একটা প্রভাব পড়েই। আমার মনে হয় স্ট্রাইক রেট বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। ডট বলের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কমপক্ষে ১৭০-৮০ রান না করলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে জয় পাওয়া কঠিন।

তামিম প্রথম ম্যাচে ১৩টি এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫টি ডট বল দেন। ৩৪ বল অর্থাৎ প্রায় ৬ ওভার ২ বলে ৩৯ রান। আরেক ম্যাচে ৮ ওভার ৫ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। তামিমের বয়সভিত্তিক দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ফাহিম।

দেশসেরা ওপেনারের ব্যাটিং কি অন্য ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব ফেলে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন দেখবেন ৬ ওভার শেষে রান রেট সাড়ে ৫, তখন যারা ব্যাট করতে নামেন; তারা তাড়াহুড়ো করে রান নিতে যান। তখন মাথায় আসে আমরা পিছিয়ে আছি। ফলে স্ট্রাইক রেট বাড়াতে গিয়ে হিতে বিপরীতে হয়।

ফাহিম যোগ করেন, বিপিএলে যারা ভালো খেলেছে, তাদের নেয়া হয়েছে। কিন্তু যাদের নেয়া হয়েছে, তারা অধিকাংশ ওপেনার। ওপরে ভালো খেলা ও পাঁচ-ছয়ে ভালো খেলা এক জিনিস নয়।

বাংলাদেশের এ স্কোয়াডে ছয়জন ওপেনিং ব্যাটসম্যান আছেন- তামিম, নাইম শেখ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন।

বাংলাদেশি ওপেনাররা টি টোয়েন্টিতে কেমন

তামিম ইকবাল-৭৩ ম্যাচ-১৬৬০ রান-২৪ গড়-স্ট্রাইক রেট ১১৭

সৌম্য সরকার-৪৮ ম্যাচ-৮০৩ রান-গড় ১৭-স্ট্রাইক রেট ১২২

লিটন দাস-২৭ ম্যাচ-৫১৭ রান-গড় ১৯-স্ট্রাইক রেট ১৩৩

এনামুল হক বিজয়-১৩ ম্যাচ-৩৫৫ রান-গড় ৩২-স্ট্রাইক রেট ১১৭

ইমরুল কায়েস-১৪ ম্যাচ-১১৯ রান-গড় ৯-স্ট্রাইক রেট ৮৮

এ পাঁচ ওপেনার কমপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলেন এবং ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করেন। তাদের মধ্যে আবার ওপেনিং পজিশনে লিটনের গড় ২০ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৮। ওপেনিংয়ে সৌম্যর স্ট্রাইক রেট ১২৮। নতুনদের মধ্যে নাইম শেখ ৫ ম্যাচে ১৮৬ রান করেন। তার গড় ৩৭, স্ট্রাইক রেট ১২৪।

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে তামিমের অবস্থান কোথায়

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে যারা ব্যাট করেন, তাদের মধ্যে এক নম্বরে রোহিত শর্মা। তিনি ৭৫ ম্যাচে ২২৪৮ রান তুলেছেন, স্ট্রাইক রেট ১৪০। এর পর আছেন মার্টিন গাপটিল। তিনি ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ২১৭২ রান তুলেছেন ৬৭ ম্যাচে।

আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিংয়ের স্ট্রাইক রেট ১৪২। তিনি রান করেছেন ১৯৭৫। ডেভিড ওয়ার্নার ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান নিয়েছেন ১৯১১। এর পর আরেক অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে রান হাঁকিয়েছেন ১৭২৮।

তিলেকরতেœ দিলশান এখানে স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে পিছিয়ে আছেন। তার স্ট্রাইক রেট ১২০। আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করে এক হাজারের বেশি রান তুলেছেন ১৮ ব্যাটসম্যান। যাদের মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট (১১৪) আহমেদ শেহজাদের। এর পরই আছেন তামিম। তার স্ট্রাইক রেট ১১৬।

তথ্যসূত্র: বিবিসি।