শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পাওলির চরম প্রেমে পরম

পাওলির চরম প্রেমে পরম

শেয়ার করুন

বিনোদন ডেস্ক ॥ প্রেমে পড়লে মানুষ কী না করে! যে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অ্যাদ্দিন ধরে সুনাম কুড়িয়ে এসেছেন শান্তশিষ্ট ভালমানুষ হিসেবে, তিনিই এবার ত্রাস হয়ে উঠেছেন। সাত চড়ে রা কাড়তেন না যিনি, তিনিই এখন কলার ধরে ঝাঁকাচ্ছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে। পরম থাকতে শাশ্বতর সাধ্য কি পাওলির ধারেকাছে ঘেঁষে? পরম-পাওলির চরম প্রেমের এমন কিস্যাই সেলুলয়েডের রুপোলি পর্দায় নিয়ে আসছেন পরিচালক-জুটি সুদেষ্ণা রায় আর অভিজিৎ গুহ। ছবির নাম ‘হারকিউলিস’।

‘কালবেলা’-র মাধবীলতা-অনিমেষের এই ছবিতে নাম মিনু আর হারু। ২০০৯ সালে গৌতম ঘোষের ছবি পার হয়ে এবার তাঁরা দেখা দিতে চলেছেন নতুন অবতারে। রোম্যান্সেও রয়েছে ট্যুইস্ট। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরকৈলাসকে অনাথ বললেই ঠিক হয়। মা, বাবা, বড় দাদা- সবাই তার মায়া কাটিয়ে চলে গেছে বেশ ছোটবেলাতেই। থাকার মধ্যে হরকৈলাসের রয়েছে মাথা গোঁজার একটা আস্তানা। পৈতৃক বাড়িটাই তার একমাত্র সম্পত্তি! চাকরি একটা করে সে কোনওরকমে দিন গুজরান করে নেয়। এমন মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রেম কি থাকতে আছে?

মুশকিল হল, প্রেম তো আর বলে-কয়ে আসে না। হারুর বাড়ির ঠিক উল্টো দিকের ফোন বুথে তাই বাসা বাঁধল প্রেম। ওই ফোন বুথটার মালকিন মিনুর প্রেমে পড়েই দু’ চোখে বিকেলে ভোরের সর্ষে ফুল দেখল হারু! তার আর মিনুর মাঝখানে যে রয়েছে আস্ত একটা ‘মোষ’! ওই নামেই সবাই ডাকে পাড়ার মস্তান শাশ্বতকে। মোষের গতিবিধি আর মতলব- দুটোর কোনওটাই মোটে সুবিধের নয়। হারুর ভালবাসা আর বাসা- দুটোর ওপরেই তার বেজায় নজর। দুটোই সে দখল করতে চায়।

এই দ্বিবিধ বিড়ম্বনায় কোণঠাসা হতে হতে আচমকাই এক শক্তি ভর করে হারুর উপর! সে যখন চায়, তখন ওই শক্তি তার সঙ্গে থাকে। তখন আর হারু হরকৈলাস নয়- সেই সত্ত্বা রুখে দাঁড়ায় হারকিউলিস নামে। হরকৈলাস নরমসরম হলেও হারকিউলিস জানে প্রতিবাদের ভাষা। বাড়ি আর পছন্দের নারী- দুটোকেই আগলে রাখে হারকিউলিস। এই হারকিউলিস-ই কি তাহলে সুপারম্যানের আদলে বাংলা ছবির সুপারহিরো?

প্রশ্নটা শোনা মাত্র নাকচ করে দিলেন পরিচালক অভিজিৎ গুহ। ‘না, না। ঠিক সেরকম নয়। আমার এই ছবির নায়ক কখনই সুপার হিরো নয়। মানুষ হিসেবে হারু অত্যন্ত সাধারণ। আর পাঁচটা মানুষের চেয়ে ভয়-ভীতি তার মধ্যে একটু বেশিই আছে। আমরা আসলে হারুর মধ্যে দিয়ে বলতে চেয়েছি যে সেই শক্তিই সার্থক যা শারীরিক নয়, বরং মানসিক। মানসিক শক্তিকে উপযুক্তভাবে প্রয়োগ করতে পারলে তবেই সব জয় করা যায়। আসলে সমাজে তো আমরা সবাই একটা ভীতির মধ্যে বেঁচে থাকি। কেউই চট করে প্রতিবাদ করি না কোনও কিছুরই; প্রতিবাদ করতে গিয়ে নানান কারণে ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসি। এই যে এসকেপিজম; এই যে পলায়নী মনোবৃত্তি, সেটাই ছবিতে সিম্বলাইজ করছে হারু’, জানালেন তিনি।

প্রশ্ন অবশ্য ছবিটাকে নিয়ে এত সহজে থেমে যাওয়ার নয়। ‘কালবেলা’-র পরে মাধবীলতা-অনিমেষের রোম্যান্সটা এই ছবিতে কেমন হবে, তা নিয়েও তীব্র কৌতূহলে আছে টলিপাড়া; পরম-পাওলির ভক্তরা তো বটেই। সেই রোম্যান্সের ছায়া কি ‘হারকিউলিস’-কে মেঘলা করবে? ‘এই ছবিতে পরমব্রত-পাওলির রোম্যান্স কালবেলা-র চেয়ে একেবারে আলাদা। হারু দুর্বল ছেলে। অন্য দিকে, তার বাড়ির উল্টোদিকে বুথের লড়াকু মেয়ে মিনু। মিনু কিন্তু হারুর প্রেমে নেই। হারুকে বরং সে করুণার চোখে দেখে। খুব আস্তে আস্তে তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেয়। হারুর মধ্যে সে খুঁজে পায় তার ভাললাগা, তার ভালবাসা’, সন্দেহের নিরসন ঘটালেন অভিজিৎ গুহ।

ইতিমধ্যেই জোর কদমে শ্যুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে ‘হারকিউলিস’-এর। ভারতলক্ষ্মী স্টুডিও-য় শ্যুট হয়েছে হারু-মিনুর কয়েকটি দৃশ্য; শ্যুট হয়েছে মোষের হাতে হারুর হেনস্থার দৃশ্য। ‘আশা করছি সামনের বছরের জানুয়ারি মাসে ছবিটা মুক্তি পাবে’, হাসতে হাসতে বললেন অভিজিৎ গুহ।