শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > পলাশে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়: নজরদারী নেই প্রশাসনের

পলাশে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়: নজরদারী নেই প্রশাসনের

শেয়ার করুন


নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমিতে ভেকু বসিয়ে ২০ থেকে ২৫ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছে একাধিক স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। তারা আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তাদের নেতৃত্বে রয়েছে একাধিক মাটি কাটার স্পট।
এসব ফসলি জমির মাটি বিক্রি হচ্ছে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন ইটভাটা গুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে এসব মাটি কাটার কাজ চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে ওই ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমি। এই অব্যাহত মাটিকাটা ও মাটি অন্যখানে নেওয়ার কারণে ব্যবহৃত ট্রলির বেপরোয়া চলাচলে গ্রামীণ সড়কগুলো ধুলাবালি ও কাদামাটিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার মানুষ অপরদিকে হচ্ছে পরিবেশ দূষণ।
সরেজমিনে ডাঙ্গা ইউনিয়নের ভিরিন্দা, গালিমপুর, জয়নগর, কাজৈর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ওই গ্রামের প্রত্যন্ত ফসলি জমির মাঠে চাষাবাদ না করে ভেকু দিয়ে অবাদে মাটি কাটা হচ্ছে। কয়েক মিনিট পরপর এক একটি ট্রলি ভরে এসব মাটি নেওয়া হচ্ছে পাশের ইটভাটাগুলোতে। সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে এসব মাটি কাটার মহোৎসব।
স্থানীয়রা জানান, এ সকল গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন, জাকির, হিরন, মরন, ইলিয়াছ, মাহিন, দেলোয়ার, ইকবাল, জাকির, রাশেদ ও সাইদুলসহ একাধিক সিন্ডিকেট। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ সকল এলাকা থেকে মাটি কাটছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ সকল গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, কৃষকরা এখন জমিতে চাষাবাদ না করে তাদের কাছে কম দামে জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। কেউ মাটি বিক্রি করতে না চাইলে জোর করে তাদের জমির মাটি কেটে নেওয়া হয়। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
ডাঙ্গার কাজৈর গ্রামের মনির ইসলাম নামে এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউনিয়ন জুড়ে প্রায় ১৮টি অবৈধ ইটভাটা থাকার কারণে শুধু এলাকার ফসলি জমিই শুধু নষ্ট নয়, চলাচলের সড়কগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অধিকাংশ ইটভাটার মালিক-জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি হওয়ায় এসব নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মাটি কাটার বিষয়ে এ সকল সিন্ডিকেটের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।
ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবের উল হাই বলেন, আমি চেস্টা করে যাচ্ছি এগুলো বন্ধ করার জন্য। অচিরেই উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। ডাঙ্গায় অধিক হারে ইটভাটার কারণে ফসলি জমির পাশাপাশি রাস্তাঘাটগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
পলাশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিলভিয়া স্নিগ্ধা জানান, মাটি কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।