আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ইসলামপন্থীদের বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
ইসলামাবাদ পুলিশ ফাইজাবাদ মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে সহিংসতায় অন্তত দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন নিহতেরও খবর পাওয়া গেছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার (ব্লাসফেমি) অভিযোগে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে ইসলামপন্থীরা। এমনকি পাঞ্জাবে মন্ত্রীর বাড়িতেও বিক্ষোভকারীরা হামলা চালিয়েছে। তবে ওই সময় হামিদ কিংবা তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না।
পরে লাহোর, করাচিসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শনিবার বিকেলেই সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শহর কর্তৃপক্ষের অনুরোধের ভিত্তিতে সেনা মোতায়েরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, শনিবার সকালে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে সময় বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা আক্রমণ চালায়; পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইট, পাথর ছুড়তে থাকে।
ফাইজাবাদ থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে প্রায় আট হাজার পাঁচশ এলিট পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী কাজ করেছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাদের মধ্যে চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। তবে সেখানে নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরে কাছে জানিয়েছেন, সেখানে বেশ কয়েকজন নিওহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বিক্ষোভকারীদের পাল্টা হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পিছু হটার জেরে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া দেশটির সকল বেসরকারি সংবাদ সম্প্রচার মাধ্যমের প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেয়া হয়। এ আশঙ্কায় যে, দেশটির মানুষজন যদি টেলিভিশনে দেখে পুলিশ সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তাতে ধর্মীয়ভাবে দাঙ্গা শুরু হয়ে যেতে পারে।
তেহরিক-ই-লাব্বাইক ইয়া রাসূলুল্লাহ পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারের একটি অংশে ইসলামের নবী মুহাম্মদের নাম বাদ পড়ে যায়। সেই ঘটনার জেরে আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ইসলামপন্থীরা।
এ ঘটনায় ক্ষমাও চেয়েছেন আইনমন্ত্রী। তার দাবি, ভুলবশত এরকম হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি