রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > নো-ম্যানস ল্যান্ডে মানবেতর অবস্থান > খাবার সংকট ও বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা

নো-ম্যানস ল্যান্ডে মানবেতর অবস্থান > খাবার সংকট ও বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বাংলাদেশের কক্সবাজারের পালংখালির আঞ্জুমান সীমান্তে নতুন করে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গা দুই দিনের বেশি নো-ম্যানস ল্যান্ডে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছে। অনাহারে থাকা এসব রোহিঙ্গারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নতুন করে আসা শরণার্থীদের জায়গা না হওয়ায় তাদের সীমান্তেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তাদের ঠিক কতদিন এমন অবস্থায় থাকতে হবে তা বলা যাচ্ছে না। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতে দিন কাটাচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষরা।

রোহিঙ্গাদের একজন নারী জানায়, দুই মাস আগে তার স্বামীকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। দুইমাস বনে জঙ্গলে থাকার পরে আর কোন পথ না পেয়ে অন্যদের সাহায্যে তার তিন সন্তানকে নিয়ে সে বাংলাদেশে সীমান্তে আসে। কিন্তু তাদের বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

খাবার নেই, মাথার উপরে ছাউনি নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এখন পর্যন্ত নো-ম্যানস ল্যান্ডে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য। তবে কত সংখ্যক রোহিঙ্গা নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান করছে তার সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। পালংখালির কর্তব্যরত কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানকারীদের সংখ্যা আনুমানিক ১৫ হাজার। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পিতৃ-মাতৃহীন শিশুও রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

সেখানে অবস্থারত রোহিঙ্গারা কেউ সংঙ্গে আনা পলিথিন টানিয়ে একটু ছাউনি তৈরি করে কোনমতে সময় পার করছে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে অনেকেরই অসুস্থ হয়ে ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্যে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেখানে পৌঁছেছে। তারা অসুস্থদের রোহিদের অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে চিকিৎসা শেষে তাদের আবার নো-ম্যানস ল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের তরফ থেকে শুকনো খাবার ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের কলেরার টিকা খাওয়ানো হচ্ছে।

সীমান্ত থেকে রোহিঙ্গাদের নড়তে না দেয়ার কারণ সম্পর্কে বিজিবির ক্যাম্প প্রধান রুবেল পাঠান বলেন, রোহিঙ্গারা এই মুহূর্তে যে পরিমাণে ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছে তাতে ক্যাম্পগুলো পরিপূর্ণ হয়ে আছে। নতুন করে তাদের রাখতে প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। এছাড়া প্রবেশ অনুমতির জন্য নিয়ম-কানুনসহ তাদের স্বাস্থ্য পরিক্ষার ব্যাপার আছে। অন্যদিকে সংখ্যা গনণা থেকে শুরু করে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের কাছে অবৈধ মাদক-অস্ত্র আছে কিনা তা পরীক্ষারও ব্যাপার আছে।

বাংলাদেশে প্রবেশের জন্যে সীমান্তের ওপারে যেসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে দু’একদিনের মধ্যে তারা যদি পালংখালির আনজুমপাড়ায় প্রবেশ করে তবে সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরাট সংশয়। সূত্র : বিবিসি বাংলা