শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > নূর হোসেন কলকাতায় গ্রেফতার

নূর হোসেন কলকাতায় গ্রেফতার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন পাঁচ সহযোগীসহ কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলকাতার দমদম নেতাজী সুভাস চন্দ্র বোস বিমানবন্দরের পাশে কৈখালী এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী শাখা।

কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াডের (এটিএস) এসিপি অনিমেষ সরকারের নেতৃত্বে একটি টিম এ অভিযান চালায়।

কলকাতার দমদম পুলিশ স্টেশন থেকে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্টেশনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, কৈখালী এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে নূর হোসেনসহ সাত খুন মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন আশিক, সুমন, শামীম সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায়, নূর হোসেনের কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি রিভলবার, বাংলাদেশ ও ভারতের ১০টি মোবাইল সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ, সিডি ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ইন্টারপোলের সহায়তায় শনিবার রাতে কৈখালী এলাকার ‘এ’ ব্লকের ইন্দ্রপ্রস্থ নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা বাগুইহাটী থানায় রয়েছেন। চিকিৎসার নাম করে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়ার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন নূর হোসেন।

তবে বিভিন্ন মিডিয়ায় নূর হোসেনের ছবি প্রকাশ ও তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় কলকাতা পুলিশ।

রোববার বেলা ১২টায় তাদের স্থানীয় আদালতে হাজির করা হতে পারে।

এদিকে কলকাতায় নূর হোসেন গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আমরা শুনেছি ভারতের পুলিশ নূর হোসেন ও তার কয়েক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে। তবে এ বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো মেসেজ আমরা পাইনি।

সেভেন মার্ডারের তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে ইন্টারপোলের ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে গ্রেফতার করতে পারে ভারতের পুলিশ।

আলোচিত এ খুনের ঘটনায় ইতোমধ্যে র‌্যাবের চাকরিচ্যুত তিনজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আরিফ হোসেন ও এম এম রানা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন যে নূর হোসেনের পরিকল্পনায় এ সাত খুনের ঘটনা ঘটে।

এছাড়া কামাল নামের এক ব্যক্তিও রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। এতে তিনি স্বীকার করেন নূর হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর ভারতে পালিয়ে যান। তাছাড়া এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের একটি ফোনালাপের অডিও প্রকাশ পায়।

সেভেন মার্ডার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে গত ২৭ মে রেড ওয়ারেন্ট জারি করে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল। ফ্রান্সভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি ২৭ মে বিকেলে তাদের ওয়ানটেড পারসনের রেড ওয়ারেন্ট পাতায় নূর হোসেনের নাম সংযুক্ত করে।

এর আগে রেড ওয়ারেন্টভুক্ত করতে গত ২২ মে পুলিশ সদর দফতরকে চিঠি দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসন। পরে পুলিশ সদর দফতর রেড ওয়ারেন্টের জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়। নূর হোসেন বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছে নিশ্চিত হয়েছিল র‌্যাব।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন।

অপহরণের পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার পর অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিলেও তিন দিনের মাথায় শীতলক্ষ্যা নদীতে অপহৃতদের লাশ ভেসে ওঠার পর লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান নূর হোসেন।

নূর হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা র‌্যাবকে ছয় কোটি টাকা দিয়ে নজরুলসহ সাতজনকে হত্যা করিয়েছেন বলে নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১-এর তখনকার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাকে অবসরে পাঠানো হয়। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা গ্রেফতার হন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম