বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
রংপুর: নিখোঁজের পাঁচদিন পর রংপুর কোতয়ালি থানার তাজহাট মোল্লাপাড়ায় নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রথীশের স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও তার দুই সহকর্মীকে গ্রেফতারের একদিন পর মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) দিনগত গভীর রাতে মরদেহটি উদ্ধার করে র্যাব-১৩।
র্যাব জানায়, নির্মাণাধীন ভবনে মাটিচাপা অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হলে রথীশের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। সেখানে নিখোঁজের ভাই সুশান্ত ভৌমিক সুবল মরদেহটি শনাক্ত করেন। এ সময় গ্রেফতার রথীশের স্ত্রী দীপা ভৌমিকেও সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক মেজর আরমিন রাব্বী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রথীশের স্ত্রীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার পর ওই বাড়িতে মরদেহটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
এর আগে র্যাব ১৩ এর কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত সার্জেন্ট রাকিব মঙ্গলবার দিনগত রাত ২টায় বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের পর নিখোঁজ আইনজীবী রথীশের পরিবারের সদস্যদের ডেকে আনা হয়েছে। মরদেহটি তার কি-না তা শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে।’
নিহত আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রংপুর জেলা কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন; দায়িত্ব পালন করছিলেন রংপুর বিশেষ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি হিসেবেও।
রংপুর আইনজীবী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক রথীশ জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেরও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন আইনজীবী রথীশ। আর তার স্ত্রী দীপা একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সম্প্রতি আলোচিত মামলা জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রথীশ চন্দ্র ভৌমিক।
তাই নিখোঁজের পর তার সহকর্মীরা ধারণা করছিলেন, জামায়াত কিংবা সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করেছে।
এর মধ্যেই সোমবার (০২ এপ্রিল) তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমানকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মূলত এরপরই ঘটনার মোড় নেয় ভিন্ন দিকে।
তবে আটক কিংবা গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করলেও তদন্তের কোনো অগ্রগতি নিয়ে মুখ খোলেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এরপর মঙ্গলবার রথীশের বাড়ির পাশের ডোবাসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পরে রাতে তা স্থগিত করা হয়।
গত ৩০ মার্চ (শুক্রবার) ভোর ৬টার দিকে রথীশ ‘কাজে বাইরে যাচ্ছেন’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান একব্যক্তির মোটরসাইকেলে করে। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় তার ভাই সুবল বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। তবে সেখানে কাউকে আসামি করা হয়নি।