স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি- এ ঘোষণা তারা অনেক আগেই দিয়েছে। এমনকি এ লক্ষ্যে বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত স্থানীয় পর্যায়ের সংগ্রাম কমিটি গঠন ইতিমধ্যে সম্পন্নও হয়েছে। নির্বাচনের সপ্তাহ দু’য়েক আগে থেকেই এ কমিটিগুলো সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে কাজও শুরু করেছে তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যেসব আসনে ভোট হবে সেসব আসনের জেলার নেতাদের গত সপ্তাহের শেষের দিকে কেন্দ্র থেকে সংগ্রাম কমিটিকে পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটির প্রধানদের নির্দেশনাও দিয়েছেন জেলার নেতারা। কাজও শুরু হয়ে গেছে।
জেলার একাধিক নেতা জানান, সংগ্রাম কমিটি এখন কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে রাজপথে আছে। তাদেরকে নির্বাচন ঠেকানোর বিষয়ে কাজ করার চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে পঞ্চগড়ের সকল সংগ্রাম কমিটিকে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমিও পুরোদমে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তারা কাজ করছে।’
সিলেট মহানগর বিএনপি সভাপতি এমএ হক সংগ্রাম কমিটি করে নির্বাচন ঠেকানোর প্রস্তুতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ম্যাডামের ঘোষণার পর সিলেট মহানগরের সকল স্তরের মানুষকে নিয়ে কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটি গঠন সম্পন্ন করা হয়েছে। আন্দোলনের পাশাপাশি কেন্দ্রের নির্দেশে নির্বাচন প্রতিহত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মহানগরের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির প্রধানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হবো।’
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সিলেটের জনসভায় নির্বাচন প্রতিহতের জন্য সারাদেশে কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। অক্টোবরের মধ্যেই কমিটি গঠন করে তালিকার কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, মহানগর-পৌরসভা থেকে ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে এ কমিটি। সংগ্রাম কমিটির প্রতিটি ইউনিটে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধি, সরকারের গত পাঁচ বছরে অসন্তুষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন মহল এবং এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কোনো কোনো জায়গায় আলাদা কমিটি করেছে বিএনপি ও জোটের শরিকদলগুলো।
এ বিষয়ে দলের সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি বলেন, ‘বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা দপ্তরে প্রবেশ করতে পারছি না। সারা দেশের সংগ্রাম কমিটি দপ্তরে জমার রয়েছে। এ কমিটিগুলো জেলায়ও সংরক্ষণ করা আছে। জেলার নেতারা কমিটিগুলোকে পরিচালনা করবেন।’
সংগ্রাম কমিটি সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে তথ্য আছে, এ নির্বাচনে শতকারা ২০ ভাগ ভোটারও ভোট দিবেন না। আর ৫০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ে পুরোদমে কাজ করছে তারা। আর যারা এই একদলীয় নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন তাদেরকে চিহ্নিত করে রাখা হবে বলেও জানান তারা।