শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > নিম্ন মানের পণ্য গছিয়েছে মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান আইরিস

নিম্ন মানের পণ্য গছিয়েছে মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান আইরিস

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) প্রকল্পে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে প্রশ্নের সম্মুখীন মালয়েশিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইআরআইএস (আইরিস) জেভি।শুধু তাই নয়, যথাসময়ে সব পণ্য সরবরাহ না করে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সঙ্গে করা চুক্তির বরখেলাপও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সরকার নিয়োজিত কেপিএমজি সিঙ্গাপুর নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই মর্মে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনেই আইরিসের ব্যর্থতার নানা দিক উঠে এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে একথা জানা যায় না।

এমআরপি ও এমআরভি প্রকল্পে আইরিসের কাজের অগ্রগতি ও দক্ষতা যাচাইয়ে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা সংস্থা কেপিএমজি সিঙ্গাপুরকে নিয়োগ দেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরীক্ষা চালায় সংস্থাটি। গত ২৭ এপ্রিল তারা প্রতিবেদন জমা দেয় বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বরাবর।

সূত্র জানায়, এ ধরনের প্রকল্পে কোন ধরনের হার্ডওয়্যার প্রয়োজন তা জানা ছিল না পাসপোর্ট অধিদফতরের।আইরিসের সঙ্গে চুক্তিতে শর্ত ছিল, প্রথম তিন বছর আইরিসের সরবারহকৃত পণ্যে কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে সে পণ্য তারাই বদলে দেবে। এছাড়া পরবর্তী ২ বছরের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলেও তাদেরই তা মেরামত করে দেওয়ার কথা।আর সরবরাহ করা পণ্য অমেরামতযোগ্য হলে তা বদলে দেওয়ার শর্তও চুক্তিতে ছিল।এছাড়া জনবল প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য বিষয়গুলোও চুক্তির অন্তর্ভূক্ত।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আইরিস প্রকল্পের শতভাগ সফটওয়্যার সরবারহ করেছে। কিন্তু এর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেপিএমজি।এছাড়া প্রকল্পের প্রায় ৯৫ শতাংশ কম্পিউটার, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশও সরবারহ করে প্রতিষ্ঠানটি।
কেপিএমজির প্রতিবেদনে তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে সুপারিশ করা হয়েছে।

কেপিএমজি সিঙ্গাপুরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার করেন এমআরপি ও এমআরভি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান।

তিনি বলেন, কেপিএমজি নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বাকি পণ্যগুলো দ্রুত সরবরাহ করতে আইরিসকে বলা হয়েছে। আশা করছি সেগুলো শিগগিরই পাওয়া যাবে।

জানা যায়, আইরিসের সঙ্গে করা চুক্তিতে নিরীক্ষার কথা উল্লেখ না থাকলেও আইরিসের অনাপত্তিতে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা সংস্থা কেপিএমজি সিঙ্গাপুরকে দিয়ে নিরীক্ষা করানো হয়। যার মূল উদ্দেশ্য ছিলো আইরিসের নির্ভরযোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই করা।

পাসপোর্ট অধিদফতরের সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুনে এমআরপি ও এমআরভি প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।এ সময়ের মধ্যে সকল পণ্য সরবরাহ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে আইরিসকে।

জানা যায়, প্রতিশ্রুত পণ্য সরবরাহ শেষ করলেই কেবল আইরিস প্রতিশ্রুত অর্থ পাবে।২০১০ সালের একনেক সভায় ২৮৩ কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।প্রকল্পের আওতায় দেশের ভেতরে এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের অনুমোদিত স্থানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু করার জন্য মেশিনারিজ স্থাপন, জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পাসপোর্ট বুকলেট কেনা, মেশিন রিডেবল স্টিকার ক্রয় করার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এমআরপি ও এমআরভি তৈরির জন্য ডাকা দরপত্রে ৩২টি প্রতিষ্ঠান শিডিউল কেনে। পরে আটটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনিম্ন দরদাতা মালয়েশিয়ার আইআরআইএস করপোরেশনকে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইকাও) নিয়মানুযায়ী, চলতি বছরের ২৪ নভেম্বর হাতে লেখা পাসপোর্টের যুগ শেষ হচ্ছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম