শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > নাসিরনগরে হিন্দুবাড়িতে রহস্যজনক আগুন

নাসিরনগরে হিন্দুবাড়িতে রহস্যজনক আগুন

শেয়ার করুন

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥
আবারও নাসিনগরের হিন্দু পাড়ার একজন হিন্দু ব্যক্তির জাল রাখার ঘরে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে রহস্যজনক বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, এলাকাবাসী ও কিছু জনপ্রিতিনিধি।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৫টার পশ্চিম পাড়ার ছুট্টু দাসের জাল রাখার ঘরটিতে এ ঘটনা ঘটে বলে আমাদের সময় ডটকমকে জানিয়েছেন নাসিরনগর থানার ওসি আবু জাফর।

তিনি জানান, খবর পেয়ে আমি পৌনে ছয়টার সময় পৌঁছে দেখি আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

এ আগুন জন্ম দিয়েছে নতুন প্রশ্ন। কেননা, একদিকে এ ঘটনার আনুমানিক ১০মিনিট আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে গঠিত ৮ সদস্যের পাহারাদার টিম সারারাত পাহারা শেষে যার যার বাড়ি প্রবেশ করেন। এমনকি ছুট্টু মিয়ার ছেলে সুজিৎ দাসও ছিলেন পাহারার কাজে। তিনিও ঘটনার ১০ মিনিট আগে ঘরে প্রবেশ করেন।

রোববার সকাল ১০টার দিকে তিনি আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, কিছুই তো বুঝলাম না। কেমনে কিতা হইল?

ছুট্টু দাস বলেন, আগুনে ফটফট কইরা আওয়াজ হইতাছিল। এইটা শুইনা আমি আগুনের টের পাই। পরে চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা আসে। সবাইরে নিয়াই আগুন নিভাই।

আগুনে তার ২ লাখ টাকার জাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় বাসিন্দা পাহারা থাকা ও গত তিন নভেম্বর দিবাগত রাতে নাসিরনগর সদরের ৫টি হিন্দু বাড়ির ছয়টি ঘরে ও গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় লোড শেডিং এর পরপরই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেবের একটি ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা- ছুট্টু দাসের জালের ঘরে আগুনের ঘটনাকে ব্যাপক রহস্যজনক করে ফেলেছে।

রহস্যজনক ভাবার আরেকটি কারণ হচ্ছে- ছুট্টু দাসের বাড়িতে আগুন লেগেছে জাল রাখার ঘরে, বসত ঘরে নয়। ৫টি বাড়ির যে ছয়টি ঘরে আগুন লেগেছিল, সেটিও ছিল রান্না ঘর, লাকড়ির ঘরে আগুন। ভাইস চেয়াম্যানের বাড়িতে যে ঘরে আগুন দেয়া হয়, সে ঘরের বারান্দায় রাখা পাটকাঠিতে আগুন দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ মানুষ পুড়িয়ে মারার উদ্দেশে আগুন দেয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাল রাখার যে ঘরটিতে আগুন লেগেছে, সে ঘরের উত্তর দিকে একটি পথ রয়েছে, এটি চলে গেছে, অতি সংলগ্ন লংগন নদীর তীরে। পশ্চিম দিকও অনেকটাই খোলা।

ছুট্টু দাস ও তার ছেলের সুজিতের ধারণা- খোলা স্থান দিয়েই দুর্বৃত্তরা এ কাজ করে থাকতে পারে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব বলেন, হিন্দু ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার পর যারা আরও আমার বাড়িসহ ছয়টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে, তারাই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। এসব ঘটনার মধ্যে কিছু মিল রয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত বলেন, কী বলব, বলার ভাষা নেই। প্রকৃত ঘটনার বিচার বাধাগ্রস্থ করতে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

তিনি এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত এসব দুষ্কৃতিকারীদের যেন সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়। তিনি আরও বলেন, এভাবে যে আগুন দিচ্ছে, এতো তো পুরো পাড়াই জ্বলে পুড়ে যেতে পারে।