বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: নাইজেরিয়ার একটি গ্রামে শনিবার গণহত্যা চালিয়েছে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম। তাদের ওই হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে বর্নো প্রদেশের রাজধানী মাইদুগুড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের দালোরি গ্রাম ও নিকটবর্তী দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। দুটি গাড়ি ও একটি মোটর সাইকেলে করে এসে অরক্ষিত ওই এলাকাটিতে দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে হত্যাযজ্ঞ চালায় সন্ত্রাসীরা। বোমা, গুলি এমনকি আগুনে পুড়িয়েও গ্রামবাসীদের হত্যা করা হয়। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশুরাও। অনেক শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে সন্ত্রাসীরা। প্রসঙ্গত, নাইজেরিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাইদুগুড়ি থেকেই উত্থান হয়েছে বোকো হারামের।
তাদের ভয়ে গ্রামবাসীদের অনেকে পাশের গামোরি গ্রামে পালিয়ে যায়। কিন্তু তাদের ওপরও চড়াও হয় জঙ্গিরা। তিন নারী আত্মঘাতী হামলাকারী পালিয়ে যাওয়াদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
বোকো হারামের হামলার খবর পেয়ে শনিবার স্থানীয় সময় রাতে পৌণে নয়টার দিকে সরকারি সেনারা দালোরি গ্রামে পৌঁছায়। কিন্তু তাদের পক্ষে জঙ্গিদের মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সেনা জানিয়েছেন, তাদের তুলনায় জঙ্গিদের অস্ত্রশস্ত্র উন্নতমানের থাকায় তাদের সঙ্গে তারা পেরে ওঠেনি। পরে ভারি অস্ত্রে সজ্জিত সেনাদের আগমনের পরই বোকো হারামের যোদ্ধারা পালিয়ে যায়।
রোববার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সাংবাদিকরা। বোকো হারামের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া গ্রামবাসীরা তাদের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, সেনারা আসতে দেরি হওয়ার কারণেই দীর্ঘসময় ধরে হত্যাযজ্ঞ চালানোর সুযোগ পেয়েছে জঙ্গিরা। আরো হামলার আশঙ্কা করছে গ্রামবাসী।
এদিকে স্থানীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ কানার জানিয়েছেন, রোববার বিকেল পর্যন্ত তারা ৮৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। অগ্নিদগ্ধ আরো ৬২ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাইজেরিয়ায় গত ৬ বছর ধরে চালানো বোকো হারামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা বেড়ে গেছে।