শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > নরসিংদীর ঘোড়াশালে পুত্র হত্যার শোকে মায়ের মৃত্যু

নরসিংদীর ঘোড়াশালে পুত্র হত্যার শোকে মায়ের মৃত্যু

শেয়ার করুন

বিল্লাল হোসেন
নরসিংদী প্রতিনিধি: মাইনুল মীর নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ফেলু মীরের ছেলে। গত মাসের ৬ ফেব্রুয়ারি ভালোবেসে শ্রাবন্তী আক্তার (২০) নামে এক তরুনী কে বিয়ে করেন মাইনুল। বিয়ের ছয় দিনপর মাইনুল মীরকে হত্যা করে সাবেক প্রেমিকা ইসরাত জাহান মীম (২০) নামে আরেক তরুনী।

ছেলে হত্যার শোকে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাইনুল মীরের ষাটোর্ধ্ব মা জননী নুরজাহান বেগমের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের মেজো ছেলে জহিরুল বলেন। মায়ের মৃত্যুর আগের আর্তনাদ গুলো কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ছোট ভাইকে হত্যার পর থেকে ‘মা’ মানসিক ও শারীরিক ভাবে ভেঙে পড়েন। প্রতিদিন একটাই আর্তনাদ ছিলো ছোট ভাইয়ের খুনির বিচার কবে হবে। এ শোকে অবশেষে আমাদের মা জননীও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মা-বাবাকে হারিয়ে আমরা সবাই এতিম হয়ে গেলাম।
শুক্রবার বা’দ জুম্মা ঘোড়াশাল বাজার ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে মরহুমা নুরজাহান বেগমের দাফন সম্পন্ন করা হয়। মরহুমা মা’ জননীর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও মাইনুল মীর হত্যার দ্রুত বিচার কার্যের দাবী জানান তার স্বজনরা।

মাইনুল হত্যা মামলার সূত্র ও পুলিশ জানায়, নিহত মাইনুল হক মীর ঘোড়াশাল পৌর এলাকায় একটি দাঁতের চিকিৎসালয়ে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রেমিকা ইশরাত জাহান মীম উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের ইমরান হোসেনের মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে মেডিকেল সহকারি হিসেবে কাজ করেন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলমান অবস্থায় গত বছরের মাঝামাঝিতে মীম আরেক ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেন। তিন মাস পর সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর আবার মাইনুলের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক জোড়া লাগে মীমের। কিন্তু এরই মাঝে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন মাইনুল। গোপনে একই সঙ্গে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালাতে থাকেন মাইনুল। গত মাসের ৬ ফেব্রুয়ারি দুজনের পরিবার রাজি না থাকায় গোপনে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ এর মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে লিপ্ত হন তাঁরা। পরে মাইনুলের বিয়ে করার কথা জানতে পেরে এর ছয়দিন পর কৌশলে মাইনুলকে তাঁর কর্মস্থলে ডেকে নিয়ে যায় তার সাবেক প্রেমিকা মীম। ঘোরাশাল পৌর শহরে দাঁতের চিকিৎসালয়ের কক্ষে মাইনুলের ঘাড়ে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করেন মীম। দু-তিন মিনিটের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েন মাইনুল। এরপর ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে মাইনুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান মীম।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইদুর মীর বাদী হয়ে পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় একমাত্র আসামি ইসরাত জাহান মীমকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদীর আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ আদালত মিমকে কারাগারে প্রেরণ করেন। আদালতে মাইনুল হত্যা বিচার চলমান বলে জানান পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ।