বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বর্ষাকে সামনে রেখে নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
বিশ্ব পানি দিবস উদযাপন উপলক্ষে বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর আমাদের প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বসে এবার জানুয়ারি মাসে বর্ষা সামনে রেখে কোন এলাকাগুলো নদী ভাঙন কবলিত, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সেগুলোকে চিহ্নিত করেছি। চিহ্নিত করে প্রতিমন্ত্রী আমি সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিজিট করেছি। বর্ষায় নদী ভাঙন ঠেকাতে কাজের গতি দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে।’
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘বর্ষা সামনে রেখে আমরা সাধ্যমতো প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। গতকাল আমি ডিজি সাহেবকে বলেছি, আজকে আমরা সিদ্ধান্ত দেব যে, বর্ষার আগ পর্যন্ত নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করার জন্য। আমরা স্টাফের সংখ্যাও অতিরিক্ত দিয়েছি।’
ভাঙন কবলিত স্থান ৫ শতাধিক জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫০ থেকে ৫৫টি এলাকা। সেগুলোই আমরা ভিজিট করেছি।’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘নদী ভাঙনের ব্যাপারে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, বৃষ্টির পরিমাণ যদি বেশি হয়, আমরা যতই বাঁধ করি না কেন, এটাকে আমরা ঠেকাতে পারব না।’
‘ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করেছে, সে মোতাবেক ওই সব এলাকার জন্য প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। যদি বর্ষার সময় কোনো এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা সেখানে প্রস্তুত আছে। ২ ঘণ্টার মধ্যে তারা সেখানে কাজ করতে পারবে’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি সহায় হন এবার বর্ষার সময়টা আমরা ভালভাবে কাটাব। আগামী বছরের জন্য জোরদার প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।’
পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘এবার ইতোমধ্যে আগাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেটা মোকাবেলা করার মতো প্রস্তুতি আমাদের আছে। বর্ষাকালে আমরা নদীতে কাজ সেভাবে করতে পারি না, অনেক সময় এতে লাভের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। সে কারণে মনে হয় অনেক প্রজেক্টে আমরা একটু পিছিয়ে আছি।’
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১২৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘সেভাবে হিসাব করলে যেগুলো পিছিয়ে আছে সেগুলো ১ বা ২ শতাংশের বেশি নয়। এরমধ্যে একটি দুটি প্রকল্প হয়তো পিছিয়ে আছে।’
আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য গুগলের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে জানিয়ে কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘এ বছরই পাইলটের কাজ শুরু হবে। এখন আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থায় একটি এরিয়া অর্থাৎ ২০০ বা ৩০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বন্যার প্রকোপ কেমন হতে পারে সেই ওয়ার্নিং আমরা দিতে পারি। সেখানে গুগল দাবি করেছে এটা একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব হবে। ঠিক ওমুক জায়গায় ওমুক তারিখে পানি আসতে পারে, স্রোত বা ঢেউ আসতে পারে। এ বর্ষাতেই সেটা নিয়ে কাজ শুরু হবে, পাইলটিং শুরু হবে।’
সচিব আরও বলেন, ‘গত বছর আমরা হাওর এলাকায় এক হাজার ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ তৈরি করেছি। এ বছর সেগুলোর কিছু কিছু স্থানে মেরামত করেছি। আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বলা যায় না। যদি হয় সেটার জন্যও আমরা প্রস্তুত আছি।’