বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ঢাকা: সুশাসনের বড় ঘাটতিতে থাকা নতুন ব্যাংকগুলোকে অভ্যন্তরীণ সুশাসন জোরদার করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়েছে।
চিঠিতে নতুন ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের অভ্যন্তরীণ সুশাসন বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র বলছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সম্বলিত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে নতুন ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে তাদের সুশাসন বাড়াতে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও অভ্যন্তরীণ সুশাসনে দৃশ্যত কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে চিঠি দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বেসরকারি সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ও কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠিতে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা জোরদার করতে বলেছে। সে মোতাবেক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সাউথ বাংলা ব্যাংক যাত্রার শুরু থেকেই ব্যাংকের সুশাসন রক্ষা করতে চেষ্টা করছে। বোর্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় কোনো হস্তক্ষেপ করে না।
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ও কমার্স ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম চালাচ্ছে বলেও জানান এসএম আমজাদ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েন এখন ব্যাংকিং খাতে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টিতে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংকও। এতে ব্যাংকগুলোয় দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।
বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠিতে বলেছে, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট কার্যক্রম গতিশীল করে ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। ব্যাংক পরিচালনায় ঝুঁকি হ্রাসের জন্যও এটি জরুরি।
এতে আরো বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনে পর্ষদ সদস্যদের সমন্বয়ে অডিট কমিটি গঠন ও কমিটিতে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের রাখতে হবে। আইন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংকগুলোর অডিট কার্যক্রমে যোগ্যতা সম্পন্নদের সমাবেশ ঘটানো দরকার।
অডিট কমিটির ৫ সদস্যের মধ্যে ২জন স্বতন্ত্র পরিচালক রাখার কথাও বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।
সূত্র বলছে, ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, নিয়োগ, আমানত সংগ্রহ, ঋণ প্রদান থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে ব্যাংক অনিয়ম হচ্ছে নতুন ব্যাংকগুলোতে। এসব ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ পরিপালন করা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে সূত্রটি বলে, নতুন ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা পর্ষদের অযাচিত কার্যক্রমে ব্যাংক ছেড়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) চলে যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন মেঘনা ব্যাংকের এমডিও। নতুন একজন কে মেঘনা ব্যাংক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা যায়, কার্যক্রম শুরুর পর গত এপ্রিলে পদত্যাগ করেন মিডল্যান্ড ব্যাংকের এমডি একেএম শহীদুল। ব্যাংক পরিচালনা নিয়ে পর্ষদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পদ ছাড়তে হয় তাকে।
গত মে মাসে পদত্যাগপত্র জমা দেন মেঘনা ব্যাংকের এমডি কাইজার এ চৌধুরী। সুশাসন নেই এনআরবি ব্যাংকেও। যে কোনো সময় ব্যাংকটির এমডি মোখলেছুর রহমান পদত্যাগ করতে পারেন। একই অবস্থা ফারমার্স ব্যাংকেও। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম