শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > নতুন তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অনেকেরই ‘জীবন বিপন্ন’ হতে পারে: সৈয়দ মহসীন

নতুন তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অনেকেরই ‘জীবন বিপন্ন’ হতে পারে: সৈয়দ মহসীন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
নরসিংদী: আবার সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী। তিনি, সাংবাদিকদের ‘খুব সতর্কভাবে লেখালেখি’ করার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, নতুন যে তথ্য ও প্রযুক্তি আইন আসছে তাতে অনেকেরই ‘জীবন বিপন্ন’ হতে পারে।

বুধবার বেলা দুইটায় নরসিংদীর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ হুমকি দেন তিনি। জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার আতিয়ার রহমান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের নরসিংদী কার্যালয়ের উপপরিচালক আরিফ খান প্রমুখ।

মন্ত্রী বলেন, “…. এখন যদি আপনারা মনে করেন এই দেশটি আমরা এমনি বানিয়েছি। আমাদের পরিশ্রম নাই। আর আপনারা যা ইচ্ছা তাই লিখে যাবেন…. আর আমরা আপনাদের ইয়ে করব…ইদানিংকালে আর একটা হইছে কী বলে অনলাইন আর ফেসবুক। যার যা ইচ্ছে তাই আপনারা…এমনকি চরম ইতরামিও হচ্ছে। এর জন্যই তথ্য প্রযুক্তি আইন আসছে। শুধু আসছে না অনেকের জীবন বিপন্ন হবে। সায় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে। একজন রিপোর্টার দিয়ে মিথ্যা করে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই লিখে যাবেন, আর আপনাদের ছেড়ে দেবে মন্ত্রী সে কথা ভাববেন না। খুব সতর্কতা নিয়ে লেখালেখি করবেন। এ ব্যাপারে নিজেরা সচেতন হবেন এবং হুঁশিয়ার থাকবেন।”

গত বছরের আগস্টে সিলেটে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একইভাবে হুমকি দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে বলেছিলেন, “এরা সবটা খবিশ, চরিত্রহীন! স্বাধীন কমিশন হলে পরে দেখে নেব তোমরা (সাংবাদিকেরা) কতটুকু যেতে পার!” পরে অবশ্য এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।

আজ রানা প্লাজা ও নারায়ণগঞ্জের খবর প্রচার করে বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে সংবাদকর্মীরা ছোট করেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা দেশের যেমন ক্ষতি করতে পারেন; রানা প্লাজা করে (রানা প্লাজা নিয়ে নিউজ করে) আপনারা সারা বিশ্বের কাছে আমাদের ছোট ও হেয় প্রতিপন্ন করে দিয়েছেন। রানা প্লাজার মতো ঘটনা; টুইন টাওয়ার যদি আমেরিকায় হয়ে থাকে তো কয়দিন (সে দেশের) গণমাধ্যমে আসতে দেখেছেন।”

তিনি বলেন, “আপনারা যে বারবার টেলিভিশনে সংবাদমাধ্যমে গণমাধ্যমে লাশ দেখিয়েছেন যার জন্য আমাদের কোটা সিস্টেম তুলে নিল আমেরিকা। দেশাত্মবোধ যদি থাকত আপনাদের, তাহলে এ কাণ্ডটা করতে পারতেন না। আপনারা একটা সময় চিন্তা করেন না। মানুষের কল্যাণ হবে না . . তারপরেও আবার নারায়ণগঞ্জের মার্ডার। বাংলাভিশন পাঁচ মিনিট পর পর দেখিয়েছে। আপনারা যেসব কার্যক্রম বা আপনাদের কলিগ কিছু করার আগে দেখবেন এবং একটা চিন্তা করবেন আমার কর্মটা কি দেশের জন্য ভালো হচ্ছে, না ক্ষতিকর করছে। আমি কী সত্যি দেশপ্রেম. . খালি সার্টিফিকেট হোল্ড করলে আর সাংবাদিক হয়ে গেলেই দেশপ্রেম হয় না। তাহলে…৭৩ সালে অনেকের বিরুদ্ধে আমরা অনেক কিছু লিখতে পারতাম। সে আমলে যদি লিখতাম তাহলে আজকে আর জামায়াতে ইসলামের জন্ম নিত না। বঙ্গবন্ধুর ক্ষমায়ও এরা আসত না। তাই আমি বলি আগে দেশপ্রেম জাগাতে হলে নিজেদের মধ্যে দেশ প্রেম সৃষ্টি করতে হবে।”

এ সময় তিনি ৬৯ এর অভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, “সমালোচনা আমি আশা করি। আরও সমালোচনা হোক।… কিন্তু সেটার লিমিট থাকবে। আমার বিরুদ্ধে সিগারেট খাওয়ার ছবি দিয়েছেন পত্রিকায়। আপনার পড়েছেন তো? লজ্জা নাই আমার। বাট আমিতো…. কলকাতার মঞ্চে বসেও সিগারেট খেয়েছি। কোনো সাংবাদিক ছবি তোলে নাই। মঞ্চে বসে। আমাকে জওহর লাল নেহেরু সম্মাননা দিল, অ্যান্ড অতীশ দীপংকর। দুটোতো অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আমি মঞ্চে সিগারেট খেয়েছি। আই এম এ কমপ্লিট চেইন স্মোকার। কিন্তু ওখানকার সাংবাদিকেরা এই ছবি তোলে নাই। আর আমাদের, ঘরে বসে সিগারেট খেলেও আপনার ছবি তোলেন। এ এটা হলো কী, আমার অধিকারটুকু আমাকে করতে দিতে হবে। আই এম নট বাউন্ড টু ইউ, অ্যান্ড ইউ আর নট বাউন্ড টু মি।…সাংবাদিক ভায়েরাও নিজেদের স্ট্যাটাস বাড়ান। আপনাদের প্রেসক্লাবগুলো ভালো করেন। এ ব্যাপারে আমরা সাহায্য সহযোগিতা করব।”

পরে বিকেলে তিনি শিবপুরে কারারচরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধদের স্কুল ও মনোহরদীর তামাককান্দা এলাকায় শিশু পরিবার পরিদর্শন করে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। নতুন বার্তা ডটকম