বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ধর্ষণের কথা এলেই অনেকেই নারীর পোশাক আশাক নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। তাদের ভাবটা এমন যেন খালি পোশাকের কারণেই তারা ধর্ষিতা হচ্ছে। ব্রাজিলও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি এক জনমত জরিপে দেখা যায়, আবেদনময় পোশাকের কারণেই নাকি নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। এই জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর ক্ষেপেছে ব্রাজিলের তরুণ সমাজ। সনাতনী এ ধারণার বিরুদ্ধে তারা অভিনব প্রতিবাদে নেমেছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে নগ্ন হয়ে ছবি প্রকাশ করতে শুরু করেছে তারা। সঙ্গে সেঁটে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন বক্তব্য।
ব্রাজিলের ‘ইনস্টিটিউট ফর অ্যাপলাইড ইকোনমিকস রিসার্স’ পরিচালিত জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ধর্ষণে পোশাকের কোনো ভূমিকা আছে কি না? জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৫ দশমিক ১ ভাগ মনে করেন, দৃষ্টিকটূ পোশাক পরার কারণেই নারীরা ধর্ষণ বা ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়ে থাকেন। ৩ হাজার ৮১০ জনের ওপর ওই জরিপটি চালানো হয়। মজার বিষয় হলো, জরিপে অংশ গ্রহণকারীদের অর্ধেকের বেশি ছিল মেয়ে।
ওই সংস্থাটি আরো জানায়, ব্রাজিলে ৫০ দশমিক ৭ ভাগ ধর্ষণের শিকার হন ১৩ বছরের নিচের বয়সীরা। মাত্র ১০ ভাগ ধর্ষণের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়ে থাকে। বলাবাহুল্য নারীরাই বেশি ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকেন। ২০১১ সালে ব্রাজিলে যেসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল তাদের ৮৯ ভাগ ছিল নারী। সব মিলিয়ে ব্রাজিলের মোট জনসংখ্যার ০.২৬ ভাগ মানুষ ধর্ষণের শিকার হয়।
ওই জনমত জরিপ প্রকাশিত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সে দেশের নারীরা। দেশের ফেসবুক ও টুইটার ভরে উঠেছে অর্ধ নগ্ন বা নগ্ন ছবিতে। এমনই এক স্বল্প পোশাকের এক ছবির নিচে লেখা ছিল, ‘আমি ধর্ষিত হতে চাই না।
একজন নারী এক ফুটবল খেলোয়াড়ের ছবি নিয়ে যে ছবি পোস্ট করেছেন তাতে লেখা আছে, ‘তিনি অশ্যই ধর্ষিত হতে চান।’
অনেক পুরুষও নারীদের পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে চালানো প্রচারণায় তারা বলছেন, ‘কোনো মেয়েই ধর্ষিত হতে চান না।’
পোশাক সংক্রান্ত ধারণার বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় সর্বপ্রথম যিনি প্রচারণায় নেমেছিলেন তিনি হলেন সাংবাদিক নানা কুয়েরসো।গত শুক্রবার রাত ৮টা থেকে তিনি এ প্রচারণা শুরু করেন। তিনি তাদের প্রতি সোস্যাল মিডিয়ায় পোশাকসহ বা পোশাক ছাড়া ছবি পোস্ট করার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান। এরপর রোববার থেকে এ সংক্রান্ত পোস্ট আসতে শুরু করে। এসব ছবি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এক যুবক এ সম্পর্টে টুইটারে লিখেছেন, ‘কোনো মেয়েই ধর্ষিত হতে চায় না, তা সে যে ধরনের পোশাকই পরুক না কেন। আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, আমার পুরুষ পরিচয় নিয়ে আমি লজ্জিত।’