শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > দেশে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র টেলিযোগাযোগ ও আইটি

দেশে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র টেলিযোগাযোগ ও আইটি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ টেলিযোগাযোগ ও আইটি/আইটিইএস বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র এবং এখানে রয়েছে বিদশেী বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা। এজন্য বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনাকারী ৯৪ শতাংশ স্ক্যান্ডিনেভিয় কোম্পানি আগামী তিন বছরে তাদের কার্যক্রম বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তাদের অভিজ্ঞতায় অন্যান্য দেশের বাজারের চেয়ে এদেশের বাজারে মুনাফার সম্ভাবনা বেশি থাকাটা আগ্রহের একটা অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাড়াও শ্রেণীর চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি চীনের মতো অন্যান্য বাজারে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় বাড়তে থাকাও এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশে স্ক্যান্ডিনেভিয় কোম্পানিগুলোর ব্যাবসায়িক আবহসংক্রান্ত পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সুইডেন বাংলাদেশ বিজনেসকাউন্সিল (এসবিবিসি) ও তিনটি স্ক্যান্ডিনেভিয় দেশের দূতাবাসের (সুইডেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডের দূতাবাস) সহযোগিতায় জরিপটি পরিচালনা করেছে নরডিক চেম্বার অবকমার্স অ্যান্ডইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ (এনসিসিআই)।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ, নিম্নমানের যোগাযোগ অবকাঠামো, আইনগত জটিলতা ও আমলাতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করলেও ৬৭ শতাংশ উত্তরদানকারী জানিয়েছেন বাংলাদেশে ইতিবাচক ব্যবসায়িক আবহ রয়েছে।

আগামী তিন বছর মেয়াদে এদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে প্রায় অর্ধেক (৪৭ শতাংশ) উত্তরদানকারী খুব সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তবে বাংলাদেশ পুরোপুরি ব্যবসা-বান্ধব এমনটি বলেনি এই কোম্পানিগুলো। তাদের মতে, বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় ব্যবসায়িক কেন্দ্রে পরিণত করতে নীতিনির্ধারকদের কয়েকটি ক্ষেত্রে নজর দেয়া উচিত।

জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে স্ক্যান্ডিনেভিয় দেশগুলোর সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র হচ্ছে টেলিযোগাযোগ ও আইটি/আইটিইএস (৩২ শতাংশ উত্তর দাতার মতে) এবং ২৫ শতাংশ উত্তরদাতা আরএমজি/টেক্সটাইলের পক্ষে মত দিয়েছেন।

এদিকে ব্যাপকতার দিক থেকে আরএমজি সবচেয়ে বড় খাত হলেও সম্প্রতি এত বেশি পরিমাণ আইটি কোম্পানি চালু হচ্ছে তাতে বাংলাদেশের অর্থনীতি উচ্চ-প্রযুক্তির শিল্পের দিকে এগুচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

জরিপ প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশে অবস্থিত স্ক্যান্ডিনেভিয় কোম্পানিগুলোতে কাজ করছেন ১০ লাখ লোক। এই খাতে আরো দক্ষলোকের কাজের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো সুবিধা বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা।

এছাড়াও জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৬৬ শতাংশ উত্তরদাতা অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহকে প্রধান সীমাবদ্ধতা বলে মনে করছেন। অন্যদিকে ৬১ শতাংশ বিশুদ্ধ পানি ও সঠিকবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন।

আর অপর্যাপ্ত ভূমি ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ের ঘাটতির কারণে কোম্পানিগুলোর মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়েছে বলে জরিপটি থেকে জানা গেছে।

জরিপটির প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এনসিসিআই “বাংলাদেশে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ: স্ক্যান্ডিনেভিয়ব্যবসায়িক প্রেক্ষিত” শিরোনামে একটি আলোচনার আয়োজন করে। আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই.এ নেলিলিনদাল কেনি ও ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স করপোরেশনের-আইএফসিএসইডিএফ বিভাগের প্রধান জন মেকিনজ।

আলোচনায় অংশ নেন এনসিসিআই প্রেসিডেন্টশামিমউলহক। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন ফিউচার লিডারসের গ্রুপসিইও ও এনসিসিআইয়ের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল কাজি এম আহমেদ। এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে তিন স্ক্যান্ডিনেভিয় দূতাবাস- সুইডেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডের দূতাবাস।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন থেকে প্রতিবছরই জরিপটি পরিচালিত হবে। বাংলাদেশে স্ক্যান্ডিনেভিয় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক আস্থা যাচাই, উদীয়মান এশিয়ার অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যত ভূমিকা নির্ধারণ, এদেশে স্ক্যান্ডিনেভীয় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানার্জন এবং বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের প্রবণতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে এ গবেষণা টিপরিচালিত হয়েছে।

মোট ৫৫টি কোম্পানিরকাছে জরিপপত্রটি পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে ৪৬টি এনসিসিআই’র সদস্য এবং নয়টি সদস্য নয়। ৫৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টি কোম্পানি উত্তর দিয়েছে, যার মধ্যে এনসিসিআই সদস্যভুক্ত ৭৪ শতাংশ এবং সদস্য নয় ৩৩ শতাংশ। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।