বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ থমকে আছে। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম (পিএইচডি) দ্য রিপোর্টের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এ সব কথা বলেছেন। সাবেক এই উপদেষ্টা দ্য রিপোর্টের সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিনিয়োগ এবং শেয়ারবাজার নিয়ে আলাপ করেন।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল বা জোট সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। আশঙ্কা হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে বড় মাত্রার আন্দোলন হবে। দেশের স্থিতিশীলতার কথা চিন্তা করে বড় দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করা।’
সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বড় ধরনের হরতাল বা এই ধরনের কঠিন রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি না থাকলেও জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজমান। রাজধানী ঢাকা শান্ত থাকলেও ঢাকার বাইরের শহরগুলোতে কিন্তু তা বিরাজ করছে না।’
বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে বড় মাত্রার আন্দোলন হতে পারে এই আশঙ্কার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ বন্ধ রয়েছে। বিনিয়োগ থেকে লাভবান হতে হলে মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে দেশে বিনিয়োগের আস্থাশীল পরিবেশ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ হয়েছে। তারপরেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমি স্বল্পতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জ্বালানি খাতের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অর্যাপ্ততা এবং পরিবহন সমস্যার কোনো উন্নতি হয়নি। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক সমস্যাতো রয়েছেই। মূলত সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশ অনুকূল নয়।’
অর্থ পাচার হচ্ছে এমন আশঙ্কা করে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে মূলধনী আমদানি (ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট) খাতে যে বিনিয়োগ দেখানো হচ্ছে তা প্রকৃত বিনিয়োগ কিনা সন্দেহ আছে। এই খাতে অনেক সময়েই ওভার ইনভয়েসিং দেখানো হয়। ওভার ইনভয়েসিং দেখিয়ে দেশের বাইরে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’
শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘যে কোনো দেশের শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের দেশের শেয়ারবাজারের সূচক ৫ হাজারের ঘরেই ওঠা-নামা করছে। যা চিন্তার বিষয়। এ ছাড়া এই খাতে এখনো বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার হয়নি। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ঘটনার কারণে বিনিয়োগকারীরা এই খাতে আস্থা হারাচ্ছে। আবার ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের মাত্রাও বেড়ে গেছে। এটাও চিন্তার বিষয়।’ সূত্র: দ্য রিপোর্ট