শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে

দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেছেন, জলাশয় ভরাট করে অনেক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, এতে ঝুঁকির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। ভবন যদি ভূমিকম্প সহনীয় না হয় তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে।

গতকাল রবিবার রাজধানীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রথম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুইদিনব্যাপী এই কনভেনশনের আয়োজন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক-এর উপাচার্য জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, বজ পাত নিয়ে আমরা এতদিন সচেতন ছিলাম না। কিন্তু সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। তাই বজ্রপাতকে দুর্যোগের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের ৬১ শতাংশ ভূমি ও ৭১ শতাংশ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এ ছাড়া ৩২ শতাংশ ভূমি ও ২৭ শতাংশ মানুষ ঘূর্ণিঝড় ও লবণাক্ততার ঝুঁকিতে রয়েছেন। ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে ৭০ শতাংশ ভূমি ও ৮০ শতাংশ মানুষ।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে তিনি বেশ কিছু সুপারিশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯২ সালের মহাপরিকল্পনাটি যুগোপযোগী করা, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ভল্যানটিয়ার নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা, ভবন নির্মাণে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞদের সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা।

গতকাল দুইদিনব্যাপী কনভেনশনের উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীরবিক্রম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আগে ছিল ছয় ঋতুর দেশ। এখন আর ছয় ঋতু নেই। শীতের সময় শীত নেই, গরমের সময় গরম নেই। আগাম বৃষ্টি, আগাম বন্যা, আগাম শীত। কোনো জিনিসে আর তাল মেলে না। কিভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায় সেজন্য এই কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে। এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উপর বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় কনভেনশন জানিয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, এতে প্রায় ২ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করছেন। সময়ের সঙ্গে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ব্যবস্থাপনাকে তাল মেলাতে অংশগ্রহণকারী সবার মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হবে। এর আলোকে আমরা আগামী দিনের পরিকল্পনা ঢেলে সাজাব।

চলতি বছর আমরা চারটি বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই চারটি দুর্যোগে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার টন খাদ্যশস্য, নগদ ৬৭ কোটি টাকা, বাড়িঘর নির্মাণের জন্য ৭ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং ৫২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছি। তিনি বলেন, চাহিদা দেওয়ার এক থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে জেলা পর্যায়ে ত্রাণের বরাদ্দ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ্ কামাল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দুইদিনব্যাপী এই কনভেনশনে ৬টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, বাস্তবায়নকারী সংস্থা, উপকারভোগী, এনজিও, জনপ্রতিনিধি, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিগত কয়েকটি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তসহ প্রায় ২ হাজার মানুষ এ কনভেনশনে অংশ নিচ্ছে। ইত্তেফাক