স্টাফ রিপোর্টার ॥
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠা এবং দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছি কীভাবে মানুষের সেবা করতে হয়। বাবা যেমন ত্যাগ স্বীকার করেছেন আমিও দেশের মানুষের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার লেখা ও তার জীবনী প্রত্যেকটি কর্মীকে পড়তে হবে। তার আদর্শ সম্পর্কে জানতে হবে। ভবিষ্যতে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে প্রতিজ্ঞা করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি যুদ্ধবিধস্ত দেশকে যখন বঙ্গবন্ধু তিল তিল করে গড়ে তুলছিলেন, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছিলেন ঠিক সেই সময় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। অতি অল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগে এনেছিলেন। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যারা এত অল্প সময়ে প্রবৃদ্ধি এই পর্যায়ে আনতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে এনেছিলেন তখনই বেঈমান মোশতাক ষড়যন্ত্র করেন। খুনি ও জিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। সেই বেঈমান মোশতাকও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। মোশতাককে হটিয়ে জিয়া নিজেই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেন। জিয়াউর রহমানকে এই মোশতাকই সেনা প্রধান বানিয়েছিলেন। মোশতাক তাকে সেনাপ্রধানের পদটি উপহার হিসেবে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্থলসীমা ও সমুদ্রসীমার বিষয়ে চুক্তি করে গিয়েছিলেন ৭৫ পরবর্তী কোনো সরকার এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। এ ব্যাপারে কোনো কথা বলারই সাহস তারা পায়নি। কারণ তারাতো সবাই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, ৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা পেরেছে শুধু বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে। ক্ষমতাকে ভোগবিলাসের বস্তুতে পরিণত করতে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা সবাই খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণার পর প্রথমেই খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। ৭ খুনের আসামিকেও রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছে। খুনিদের যোগ্যতা ছিল একটাই সেটা হলো তারা একজন রাষ্ট্রপতিকে খুন করেছে। তারা মুজিবকে হত্যা করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, জিয়ার পর এরশাদ-খালেদা জিয়া সবাই তো খুনিদের পাশে নিয়ে রাজনীতি করেছেন। খুনিদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ দিয়েছেন। খুনি রশিদ ও কর্নেল হুদাকে বিরোধী দলের নেতা বানিয়েছেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সভায় সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।