বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, পরিস্থিতি এমন যে, রাষ্ট্রের স্বার্থে কথা বলা যাবে না; যদি তা সরকারের বিপক্ষে যায়। দেশবিরোধী চুক্তি নিয়ে কথা বলায় মেধাবী ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার সংসদের বৈঠকে জরুরি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ নোটিশের ওপর দুই মিনিটের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, আওয়ামী পরিবারের সন্তান হওয়ার পরও শিবির আখ্যা দিয়ে আবরারকে হত্যা করা হল। একইভাবে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে খুলনা আওয়ামী লীগের এক নেতা দলীয় পদ হারিয়েছেন।
ছাত্রলীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, চারদিকে ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে মানুষ দিন কাটাচ্ছে। নোংরা রাজনীতির চক্করে পড়ে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বহু ছাত্র নরপিশাচে পরিণত হয়েছে।
‘কারও ওপর নির্যাতন করার আগে তাকে জামায়াত-শিবির নাম দেয়া এবং তারপর হত্যা পর্যন্ত জায়েজ হয়ে যায়। আবরারের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে’-যোগ করেন রুমিন।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, প্রাচ্যের অপফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি ছাত্র হলে আছে শতাধিক টর্চার সেল। সেখানে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নিরঙ্কুশ আধিপত্য। র্যাগিংয়ের নামে চলে দানবীয় অত্যাচার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক ভিসি দক্ষ প্রশাসক না দলীয় কর্মী তা এখন বোঝা দায়।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলিট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ৬ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।