শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > দূর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙ্গে দেয়া পর্যন্ত এই অ্যাকশন চলতে থাকবেঃ সেতুমন্ত্রী

দূর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙ্গে দেয়া পর্যন্ত এই অ্যাকশন চলতে থাকবেঃ সেতুমন্ত্রী

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুরঃ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চাঁদাবাজী চলবে না। টেন্ডারবাজী চলবে না। মাদক ব্যবসা চলবে না। জমি দখল চলবে না। দুর্নীতি চলবে না। সকলকে তিনি হুশিয়ার হতে বলেন। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। দূর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙ্গে দেয়া পর্যন্ত এই অ্যাকশন চলতে থাকবে। দুর্নীতি আর দূর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙ্গে দিতে হবে।

তিনি মঙ্গলবার বিকেলে শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আওয়ামীলীগের গাজীপুর মহানগর ও জেলা শাখার প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন আর অর্জনের কোন দাম নেই, যদি আচরণ খারাপ হয়। ভাল ব্যবহার না করলে ভালো উন্নয়নের কোন দাম নেই, কোন মূল্য নেই। তিনি দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কাজ হলো মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা। মানুষকে খুশী করাটাই হলো আপনাদের কাজ। কলহ করবেন না। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। মশারীর মধ্যে মশারী টানাবেন না। তিনি দল ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের পকেটে আনবেন না। এ খারাপ লোকেরা বসন্তের কোকিল। বসন্ত আসলে আসবে। আর ক্ষমতা চলে গেলে পাঁচ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। আওয়ামীলীগ সুবিধাবাদীদের দল নয়। আওয়ামীলীগ আদর্শের দল। আদর্শ হচ্ছে আমাদের শিকড়। আদর্শের শিকড় থেকে বিচ্যুত হলে আওয়ামীলীগ বাঁচবে না। আওয়ামীলীগ বাঁচবে আমরা যতদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আকড়ে ধরে রাখব। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বাঁচাতে হলে আওয়ামীলগকে বাঁচাতে হবে।

বিএনপির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির এখন বেলা শেষ। শেষ বেলায় তারা ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে না। একটার পর একটা ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নিচ্ছেন ঘরের লোকের বিরুদ্ধেও। বিএনপির হাতে কোন ইস্যু আমরা দেব না, দেব না।

পিঁয়াজ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পিঁয়াজের মূল্য এখন নিয়ন্ত্রণে এসে যাচ্ছে। দাম কমে যাচ্ছে। ইনশাল্লাহ পিঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে। লবন নিয়েও অনেকে কারসাজি শুরু করেছে। লবনের মূল্যও বাড়ছে। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। আমি মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি।

তিনি আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখুন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আপনাদের এক থাকতে হবে। কমিটি গঠন করতে গিয়ে পকেট কমিটি করবেন না। কমিটি গঠন করতে গিয়ে দু:সময়ের ত্যাগীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। অনুপ্রবেশকারী ক্লিন ইমেজধারীদের আমরা স্বাগত জানাব। কিন্তু দূষিত রক্তের আমাদের দলে দরকার নেই। সারা বাংলায় আওয়ামীগে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সেতু মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে কোন চুক্তি হয়নি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারক এক নয়। তাদের এখন ভারত বিরোধিতা কেন? আমরাতো জানি ভারতের অনুগত্য পাওয়ার জন্য বিএনপি ভিক্ষা চাইছে। তারা তাতে বারে বারে ব্যর্থ হয়ে এখন আওয়ামীলীগকে ভারতের সঙ্গে জড়িয়ে পুরানো সেই সুরে নতুন খেলা শুরু করেছে। আমাদের বন্ধু ভারত। আমরা ভারতের প্রতি অনুগত্য দেই না। আমরা বন্ধুত্ব করেছি। আমাদের শক্তির উৎস আমাদের জনগণ। কোন বিদেশী শক্তি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল), ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী, সদস্য আখতারুজ্জামান, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সদস্য আজমত উল্লাহ খান, সদস্য সিমিন হোসেন রিমিন এমপি, সদস্য ইকবাল হোসেন (অপু) এমপি, সদস্য গোলাম কবির রাব্বানী (চিনু), মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, বেগম শামসুন্নাহার ভূইয়া এমপি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গাজীপুর সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাঙ্গীর আলম।

আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দলে অনুপ্রবেশকারীদের পথ বন্ধ করতে হবে। অনুপ্রবেশকারীদের দলে ঢুকানো আত্মহত্যার শামিল। দলে যাতে কোন অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করতে না পারে, সেই দিকে সকলকে সজাগ থাকতে বলেছেন। তিনি দলে পুরানো ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করার অনুরোধ জানিয়েছেন। জননেত্রী বারবার এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা করেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল বলেন, বর্তমানে আপনারা দেখছেন আমাদের দলের যারা বিপদগামী তাদের কি শাস্তি হয়েছে এবং হচ্ছে। আমাদের সংগঠনের লোক বাদ যায়নি এর মানে কি? অন্যান্য কেউ এ শাস্তি থেকে বাদ যাবে না। যেখানে যে কেলেঙ্কারিতে জড়িত, পিঁয়াজ কেলেঙ্কারি বলেন, অন্যান্য কেলেঙ্কারি বলেন, যারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে আইনের আওতায় তারা সকলেই আসবেন। যারা মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, সে যে-ই হোক তাদের কেউ ছাড় পাবে না।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়মীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে যেই ঘোষণাপত্র, যে রাজনৈতিক ইশতেহার জনগণের কাছে উপস্থাপন করেছেন, সেই ইশতেহার এবং ঘোষণাপত্র অধ্যায়ন করে দলের সকল নেতাকে দল পরিচালিত করার অনুরোধ করেছেন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, সারা বিশে^ যত প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে সৎ প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে সফল প্রধানমন্ত্রীর নাম এসেছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। যেই নেত্রী সারা বিশে^ আমাদের সম্মান এনে দিয়েছেন, আমাদের মর্যাদাকে উঁচু করেছেন। একটি মহল তার এ সুনাম সহ্য করতে না পেরে একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। যখনই আমরা ভাল কাজ করছি, দেশের উন্নয়ন করছি, তখনই ওই মহল আমাদের পেছনে ফেলতে, আওয়ামীলীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ষড়যন্ত্র করছে। আজ পেঁয়াজকে উপলক্ষ্য করেও তারা ষড়যন্ত্র করছে। তারা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, আওয়ামীলীগ তাদের ওই ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেবে না।