দিনাজপুরে ভবেশের ধুম্রজাল চাঞ্চল্যকর মৃত্যুর ৪ দিন পর বিচারে চেয়ে ছেলের হত্যা মামলা

দিপংকর রায় দিনাজপুর বুর‍্যো

দিনাজপুরের বিরলের ভবেশ রায়ের ধুম্রজাল ও চাঞ্চল্য কর মৃত্যুর ৪দিন পর বিচারে চেয়ে বিরল থানায় ছেলে স্বপন চন্দ্র রায়ের হত্যা মামলা দায়ের।

২১শে এপ্রিল (সোমাবার) বিকাল আনুমানিক সোয়া ৪টায় বিরল থানায় হাজির হয়ে মৃত ভবেশ রায়ের ছেলে স্বপন চন্দ্র রায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। এসময় স্বপন রায়ের সাথে উপস্থিত ছিলেন ভগ্নিপতি রঞ্জিত চন্দ্র রায় সহ এলাকার স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি।
এই হত্যা মামলায় বিরল উপজেলার বাসুদেব পুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোঃ আতিকুর ইসলাম (৪০) কে প্রধান আসামি করে আরো ৩ জনকে আসামি করা হয়। অন্যান্যরা হলেন শহর গ্রাম এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে রতন ইসলাম (৩০) , নরসিংহ পাড়ার আব্দুল মাজেনের ছেলে মো মুন্না ইসলাম(২৭) ও পাঁচশালা এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো রুবেল (২৮)। এ ছাড়াও আরো ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানা যায় চঞ্চল্যকর এই ঘটনায় মৃত ভবেশ রায় পেশায় কৃষক। এছাড়াও বিরল উপজেলা শাখার
পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন। আসামি সুদের ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান ও রতন ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের নিজ এলাকায় গোপনে ও প্রকাশ্যে সুদের ব্যবসা চালাতেন। আসামি সুদি ব্যবসায়ীরা মৃত ভবেশ রায়ের সাথে পরিচিত হওয়ার সুবাদে সম্পর্ক ভালোই ছিল। মৃত ভবেশ রায়ের আর্থিক সমস্যা ও বিপদের কারনে প্রায় ১ বছর পূর্বে অভিযুক্ত প্রধান আসামি আতিকুর রহমানের কাছে প্রতি মাসে ৩ হাজার ২শ ৫০ টাকা লভ্যাংশ নেওয়ার শর্তে ২৫ হাজার টাকা ধার দেন। এমতাবস্থায় পারিবারিক অভাব অনটনের কারনে ধারের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় প্রতি মাসে সুদের লভ্যাংশ ৩ হাজার ২শত ৫০ টাকা পরিশোধ করতেন।

গত ১৭ এপ্রিল ২৫ ইং বৃহষ্পতিবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টার সময় দুইটি মটর সাইকেলে আসামিরা সুকৌশলে মৃত ভবেশ রায়কে প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এমন ঘটনা জানার পর মৃত ভবেশ রায়ের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয় তার ছেলে স্বপন চন্দ্র রায়।

এজাহারে আরো জানা যায় মৃত ভবেশ রায়কে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সুদের টাকার জন্য আসামিরা বিভিন্ন ভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। আসামিদের মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়ে তার পিতা ভবেশ রায়। অসুস্থ হওয়ার পরে আসামি রতন মৃত ভবেশ রায় নাড়াবাড়ী বাজারে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে মুঠো ফোনে জানায়। স্বপন চন্দ্র রায় দিনাজপুরে অবস্থান করার কথা জানানোয় আসামিরা ভ্যানে করে। তার বাবাকে ফুলবাড়ী বাজারে রাস্তার পার্শ্বে ফাঁকা জায়গায় রাখলে। আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে জানালে দিনাজপুর শহর থেকে জরুরী ভাবে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে। আমার মা শান্তনা রানী সহ কয়েক জন স্বজনকে নিয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছালে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার পিতার পালস স্পর্শ করে বলে তিনি আগেই মারা গেছেন।

থানায় মামলা করার পর স্বপন চন্দ্র রায় তার পিতার এমন মৃত্যুর সুষ্ঠ বিচার দাবি করে জানান। সামাজিক ও ধর্মীয় বিধিবিধান কর্ম শেষ করার কারনে মামলা করতে দেরী হয়েছে। মামলার আগ পর্যন্ত কোন প্রকার হুমকি ধামকি পাননি। বরং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।

মামলার বিষয়ে বিরল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস ছবুর বলেন, মৃত ভবেশ রায়ের ছেলে আজ(সোমবার) বিকেল সোয়া চারটায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। এজাহারটি আমলে নিয়ে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা গ্রহণ নেওয়া হয়েছে। মামলা নং ১১৯। তদন্ত সাপেক্ষে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

Related News

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫