রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > দল নয় দেশ আগে : দলের অধিবেশনে বললেন মোদী

দল নয় দেশ আগে : দলের অধিবেশনে বললেন মোদী

শেয়ার করুন

আন্তজার্তকি ডেস্ক ॥
দল নয়, দেশ আগে। দলীয় সভায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবং জনপ্রতিনিধিদের এ কথা মনে করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়াদিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সোমবার বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বর্ধিত অধিবেশনের আয়োজন হয়েছিল। ১৩টি বিজেপি শাসিত রাজ্যের মন্ত্রীদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন এ দিনের সভায়। ছিলেন লোকসভা এবং রাজ্যসভার বিজেপি সদস্যরা। ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি বিধায়করাও। ২৫০০ প্রতিনিধির সমাবেশে দলের প্রতি নরেন্দ্র মোদীর সতর্কবার্তা, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতা করা হবে না। শুধু ভোটের রাজনীতির কথা ভাবলে চলবে না, তার বাইরেও ভাবতে হবে বিজেপিকে— বার্তা নরেন্দ্র মোদীর।

স্বচ্ছ ভারত মিশন, নির্মল গঙ্গা অভিযান, বেটি পঢ়াও বেটি বচাও, ডিজিটাল ইন্ডিয়া-সহ একগুচ্ছ সরকারি কর্মসূচির সূচনা হয়েছে মোদী ক্ষমতায় আসার পর। এই সব সরকারি কর্মসূচি কতটা সফল, তা নিয়ে সম্প্রতি বিরোধী শিবির থেকে প্রশ্ন তোলাও শুরু হয়েছে। বিরোধীদেরকে এই প্রশ্ন তোলার অবকাশ দিতে চান না প্রধানমন্ত্রী। সেই দায়িত্ব দলকেই নিতে হবে, সোমবার তালকাটোরা স্টেডিয়ামের সভায় নিজের দলকে সেই বার্তাই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও কর্মসূচিই সফল হবে না, মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর। তাই সাধারণ মানুষকে সচেতন করে সরকারি কর্মসূচিগুলিতে তাঁদের অংশগ্রহণ দলকেই নিশ্চিত করতে হবে, বার্তা মোদীর।

তিনি বলেছেন, ‘‘পরম্পরাগত রাজনীতি যেমন চলার চলবে, কিন্তু যে জনাদেশ আমরা পেয়েছি, তাতে রাজনীতিকে আমরা শুধু নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখছি না, তার বাইরেও নিয়ে যাচ্ছি।’’ সে প্রসঙ্গে বলতে বলতেই প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘দেশের স্বার্থ আগে, তার পরে দলের স্বার্থ।’’বিজেপিকে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার পরামর্শও এ দিন দিয়েছেন মোদী। শুধু নেতারা নন, নেতাদের আত্মীয়-পরিজনদের নামও যেন দুর্নীতিতে না জড়ায়, দলীয় সভায় সোমবার এমন সতর্কবার্তাও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্নীতি সম্পূর্ণ মুছে না যাওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চলবে।’’ এদিন অধিবেশন উদ্বোধন করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা করেন। সম্প্রতি আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে ভারতের পরিবারতান্ত্রিক সংস্কৃতি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন রাহুল গাঁধী।

তাঁর জবাব দিয়ে অমিত শাহ’র মন্তব্য ,পরিবারতন্ত্র ভারতের পরম্পরা নয়, ওটা কংগ্রেসের পরম্পরা। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও এ দিন সরব হয়েছেন অমিত শাহ।ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলেতে সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। সেখানে রাহুলকে পরিবারতন্ত্র সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। রাহুল পরিবারতান্ত্রিক ভাবে কংগ্রেসের নেতৃত্বে আসীন হয়েছে, এই অভিযোগ সম্পর্কে তিনি কী বলবেন, জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। জবাবে কংগ্রেস সহ-সভাপতি দাবি করেন, পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে শুধু তাঁকে বিদ্ধ করা উচিত হবে না, গোটা ভারতই পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমেই চলে। রাজনীতিতে শুধু নয়, ভারতে শিল্প, বাণিজ্য, এমনকী ফিল্ম ইনডাস্ট্রিতেও পরিবারতন্ত্র চলে বলে রাহুল মন্তব্য করেন। শিল্প ক্ষেত্রে অম্বানীরা, বলিউডে অভিষেক বচ্চন, রাজনীতিতে অখিলেশ যাদব বা এম কে স্ট্যালিনরাও পরিবারতন্ত্রেরই উদাহরণ বলে রাহুল মন্তব্য করেন। সোমবার সেই মন্তব্যেরই জবাব দিয়েছেন অমিত শাহ।রাহুল ভুল বুঝেছেন, পরিবারতন্ত্র কখনওই ভারতের পরম্পরা নয়, পরিবারতন্ত্র হল কংগ্রেসের পরম্পরা।

দলীয় সভায় এ দিন এমনই বলেন অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদীর সরকার ভারতের ধর্মনিরপক্ষে সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেশে অসহিষ্ণুতা বাড়িয়ে তুলছে বলেও বার্কলেতে মন্তব্য করেছিলেন রাহুল। অমিত শাহ এ দিন সে মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন। বিদেশে গিয়ে কংগ্রেস সহ-সভাপতি যে ভাবে দেশের নিন্দা করেছেন, বিজেপি সভাপতি এ দিন তার নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ রাজত্বে দেশের সরকারের বিরুদ্ধে যে সব কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল, সে দিকে ইঙ্গিত করে অমিত শাহ দাবি করেন, গত সাড়ে তিন বছরে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে ওই রকম অভিযোগ কেউ তুলতে পারেননি। অমিতের কথায়, ‘‘বিজেপির রেকর্ডই বিজেপির হয়ে কথা বলছে।’’