শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > তিস্তা নিয়ে মমতা কী করেছেন জানি: হাসিনা

তিস্তা নিয়ে মমতা কী করেছেন জানি: হাসিনা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আন্তরিক থাকলেও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোভাব সহায়তামূলক নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিস্তা চুক্তিতে মমতার বিরোধিতা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি (মমতা) কী করেছেন তা আমরা জানি।”
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরকালে গত রোববার গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ পরিস্থিতি, তার সরকার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শান্তি, যোগাযোগ, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে কথা হয়।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে জানিয়ে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের প্রতি বিশ্বনেতারা পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করলেও এতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। কারো কারোর মধ্যে আশঙ্কা জন্মেছিল, কয়েকটি বিরোধী দলের সৃষ্ট নির্বাচন-পূর্ব গোলযোগ নির্বাচনের পরও অব্যাহত থাকবে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। জনগণ এ ধরনের সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খখল পরিস্থিতি মেনে নেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন এবং একজন সংসদ সদস্য আন্তঃপার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এটি আমার সরকার ও পার্লামেন্টের প্রতি বিশ্বের সমর্থন প্রমাণ করে।”
শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা সম্পর্কে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বিএনপির সরকারের সময়ে দেশের একজন নাগরিক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করেন। সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশ সবাইকে মেনে চলতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সব সময় চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। দিল্লিতে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গেও সম্পর্ক চমৎকার রয়েছে। সম্প্রতি নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খুবই আন্তরিক পরিবেশে তার বৈঠক হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কিছু সমস্যা থাকেই। তবে এ বিষয়ে আমার নীতি হলো, কোনো মধ্যস্থতা ছাড়াই দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করা। আমরা ইতিমধ্যে গঙ্গার পানি বন্টন ও সীমান্ত সীমানাবিরোধসহ অনেক সমস্যার সমাধান করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের ওপর দিয়ে আসা ৫৪টি নদীর পানির হিস্যা নিয়ে পানিবিষয়ক যৌথ কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে এবং আমরা তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষরে আশাবাদী।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা সত্ত্বেও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরে প্রধানমন্ত্রী কতটা আশাবাদ্-ী এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমরা জানি তিনি কী করেছেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য দলগুলো খুবই সহায়ক মনোভাবের। একমাত্র তিনিই সহায়তা মনোভাবের নয়। তবে আমি নিশ্চিত, এক সময় তিনি ঠিকই বুঝতে পারবেন এবং সহযোগিতা করবেন।”
প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অঞ্চলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সহযোগিতা, যোগাযোগ ও বাণিজ্যের অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো ব্যবস্থা সম্ভব হবে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নেতারা দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য সরবরাহ, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসুবিধা, সেনিটেশন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনগণের ক্ষমতায়নের মতো বিষয়গুলোতে ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের অভ্যন্তরের অথবা বাইরের কোনো শক্তি আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু বাংলাদেশে শান্তি চাই না, সমগ্র অঞ্চলে শান্তি চাই। অগ্রগতির জন্য শান্তি প্রয়োজন। আমরা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য কাউকে আমাদের ভূমি ব্যবহার করার সুযোগ দেব না।
শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভারত, মিয়ানমার ও চীন সফরকালে একই অনুভূতি পেয়েছি।
বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব রয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শেয়ার করবে এবং সড়ক ও রেল যোগাযোগের উন্নতি করবে। এই প্রস্তাবে ভারতের প্রায় সম্মতি রয়েছে।