শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > তারকা কোচের প্রতি আগ্রহ নেই নাদালের

তারকা কোচের প্রতি আগ্রহ নেই নাদালের

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥ রাফায়েল নাদালই ভান লেন্ডলকে কোচ করার পরই ভাগ্য ফিরেছে অ্যান্ডি মারের। ঘুচেছে ব্রিটিশদের গ্র্যান্ড স্লাম হাহাকার। কিছুদিন আগে মারের দেখানো পথেই হাঁটলেন নোভাক জোকোভিচ। আবারও বিশ্বসেরা হতে সার্বিয়ান গুরু মেনেছেন বরিস বেকারকে। তবে সাবেকদের শরণ নেওয়ার এই পথে পা ফেলতে রাজি নন বিশ্বের শীর্ষ পুরুষ খেলোয়াড় রাফায়েল নাদাল। লাল দুর্গের রাজার পূর্ণ আস্থা বর্তমান কোচ চাচা টনি নাদালের ওপর।

টেনিসে হাতেখড়ি থেকে ১৩টি গ্র্যান্ড স্লাম জয় টনির হাত ধরে পাওয়া। মুবাদালা ওয়ার্ল্ড টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নাদাল। সেখানেই পরশু গালফ নিউজকে নিজের ভাবনাটা জানালেন বিশ্বসেরা খেলোয়াড়, ‘গ্রেট চ্যাম্পিয়নদের ট্যুর গেমে পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার। তারা খেলাটার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেন। এই মৌসুমে ইভান ও বরিসকে এখানে পাওয়াটা বেশ বড় ব্যাপার। এটা ভালো, ট্যুরে এটা ভালো ফলই দেয়।

তবে টেনিসটা যে ব্যক্তিগত খেলা, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন নিজের অবস্থান, ‘যাই হোক, আমি আস্থা রাখব আমার দলের ওপরই। আমি সব সময়ই মনে করি খারাপ খেললে সেটা আমারই দোষ। আর যখন জিতি সবকিছু ঠিকঠাক হয় বলেই জিতি। ক্যারিয়ারের সব সাফল্য আমি এই একটা দল (কোচিং স্টাফ) নিয়েই পেয়েছি। এই দলের সঙ্গে ভালো-খারাপ দুটি অভিজ্ঞতাই হয়েছে। আমি জানি কোনো কিছু খারাপ গেলে সেটার জন্য আমিই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’

তবে শুধু মারে-জোকোভিচই নয়, সম্প্রতি সময়ে রজার ফেদেরার কাজ করেছেন স্টিফেন এডবার্গের সঙ্গে। রিচার্ড গ্যাসকেট কোচ করেছেন সের্জি ব্রুগেরাকে। জাপানের কেই নিশিকোরি কোচ করেছেন মাইকেল চ্যাংকে।

.কমদৃষ্টিহীনদের দাবা খেলা
স্পোর্টস ডেস্ক॥ চোখে না দেখতে পেলেও হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই দাবা খেলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। খাওয়া শেষে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের করিডোরে হাঁটাহাঁটি করছিলেন মনির হোসেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই দাবাড়ুকে সাহায্যের জন্য সঙ্গে ছিলেন আরেকজন মহিলা। ফেডারেশন কার্যালয়ে শুরু হওয়া গ্রামীণফোন জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবায় মনিরের মতো অন্তত ১১০ জন দাবাড়ু খেলছেন। খেলার বিরতিতে মুঠোফোনে গান শুনতে কেউ ব্যস্ত। কেউ বা খোশগল্পে মেতে উঠেছেন বন্ধুর সঙ্গে। সে এক উত্সবমুখর পরিবেশ। জীবনের একটা অংশের না পাওয়ার বেদনার বাস্তবতা এরা মেনে নিয়েছেন। খেলার আনন্দেই ভুলে যেতে চান না পাওয়ার দুঃখগুলো।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এসব দাবাড়ুর অনেকেই জন্মান্ধ। কেউ বা অসুখে ভুগে বা দুর্ঘটনায় চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন। তাহলে দাবা খেলেন কীভাবে ওঁরা?

সাধারণ দাবার বোর্ডের চেয়ে একটু আলাদাই অন্ধদের দাবা বোর্ড। ঘুঁটিগুলোও তৈরি করা হয় একটু ব্যতিক্রমভাবে। হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত একজন দাবাড়ু ঘরগুলোর অবস্থান বুঝতে পারেন। এগুলোকে বলা হয় টেকটাইল বোর্ড। কাঠের তৈরি বোর্ডের সাদা ও কালো রঙের ঘুঁটির মধ্যে পার্থক্য করা হয় তৈরির সময়। বোর্ডের মধ্যে উঁচু ও নিচু দুই ভাগে ঘর তৈরি করা হয়। নিচু বোর্ডে সাদা ঘুটি ও উঁচু বোর্ডে বসানো হয় কালোগুলো। ঘুঁটি চেনার জন্যও থাকে আলাদা চিহ্ন। সাদা ঘুঁটির মাথার উপরে আলপিনের মতো সামান্য উঁচু করা থাকে, যেটার ছোঁয়ায় একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ু সহজেই চিনতে পারেন ঘুঁটি। আর কালো ঘুঁটি থাকে মসৃণ। সাধারণত ভারত থেকে এই বোর্ড নিয়ে আসা হয়। তবে বাংলাদেশেও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে কিছু। কাঠের তৈরি এই বোর্ডের বাজারমূল্য ১ হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। বিদেশে ওক কাঠের বোর্ড প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে পারটেক্স বা কাঁঠাল, সেগুন কাঠ দিয়ে এগুলো তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ুদের নিয়ে প্রথম খেলা শুরু করেন ব্রেইল চেস সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হোসাইন ফারুক। সেটা ১৯৭৭ সালের ঘটনা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে নাজমুল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ভাইয়েরা যখন দাবা খেলতেন, আনন্দ করতেন, তিনিও তখন খেলতে চাইতেন। কিন্তু সাধারণ বোর্ডে তো আর খেলা সম্ভব না। কী আর করা? মনের দুঃখ মনে চেপে রাখতেন নাজমুল। পরে ১৯৮৮ সালে মিরপুরে দি স্যালভেশন আর্মির সহায়তায় নিজে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সঙ্গে দাবা খেলেন, নিজেও শেখাতেন অন্যদের। এরপর ১৯৮৯ সালে ব্যাপ্টিস্ট সংঘের কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সিনহা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

দুই বছর পর প্রথম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে নাজমুল একটি টুর্নামেন্ট করেন মিরপুরের রিক্রিয়েশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ুদের নিয়ে পথচলা সেই শুরু। এরপর সারা দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দাবাকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৯৭ সালে তোপখানা রোডে শিশুকল্যাণ পরিষদে আরেকটি টুর্নামেন্ট করেন। আর ১৯৯৮ সালে দাবা ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত হয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দাবা। ২০০২ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ ব্রেইল চেস সোসাইটি। সেই থেকে প্রতি বছরই সংগঠনটি নিয়মিত জাতীয় দাবার আয়োজন করে আসছে।

এখান থেকেই উঠে এসেছেন দেশের সেরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ু আজগর আলী, কামাল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, আবিদ হোসেন, মনির হোসেন, শামসুল ইসলামরা। পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন আজগর আলী দুঃখ করে বলছিলেন, ‘আমরা সেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাই না দাবায়। এ জন্য দেশের বাইরে কোনো টুর্নামেন্টে অংশও নিতে পারি না।’

এ বছরই স্পেনে আন্তর্জাতিক ব্রেইল চেস চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। আর্থিক সংকটের কারণে যাওয়া হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবা ফেডারেশন এরই মধ্যে পাঁচটি দাবার বোর্ড ও দুটি দাবার ঘড়ি দিয়েছে বাংলাদেশকে।

এই দাবাড়ুদের উত্সাহ দিতে নেই কোনো বড় অঙ্কের প্রাইজমানি। কারণটাও ওই একই—আর্থিক টানাপোড়েন। দাবাড়ুদের আক্ষেপ—নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান বা রানী হামিদদের মতো দাবাড়ুরা কেন একবারও খেলা দেখতে আসেন না। তাঁরা এলে পেতেন অনেক অনুপ্রেরণা।

ওদের অন্ধকার পৃথিবীতে খেলাটাই যে একমাত্র আনন্দ-আলো!

ঢাকা: চোখে না দেখতে পেলেও হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই দাবা খেলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। খাওয়া শেষে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের করিডোরে হাঁটাহাঁটি করছিলেন মনির হোসেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই দাবাড়ুকে সাহায্যের জন্য সঙ্গে ছিলেন আরেকজন মহিলা। ফেডারেশন কার্যালয়ে শুরু হওয়া গ্রামীণফোন জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবায় মনিরের মতো অন্তত ১১০ জন দাবাড়ু খেলছেন। খেলার বিরতিতে মুঠোফোনে গান শুনতে কেউ ব্যস্ত। কেউ বা খোশগল্পে মেতে উঠেছেন বন্ধুর সঙ্গে। সে এক উত্সবমুখর পরিবেশ। জীবনের একটা অংশের না পাওয়ার বেদনার বাস্তবতা এরা মেনে নিয়েছেন। খেলার আনন্দেই ভুলে যেতে চান না পাওয়ার দুঃখগুলো।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এসব দাবাড়ুর অনেকেই জন্মান্ধ। কেউ বা অসুখে ভুগে বা দুর্ঘটনায় চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন। তাহলে দাবা খেলেন কীভাবে ওঁরা?

সাধারণ দাবার বোর্ডের চেয়ে একটু আলাদাই অন্ধদের দাবা বোর্ড। ঘুঁটিগুলোও তৈরি করা হয় একটু ব্যতিক্রমভাবে। হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত একজন দাবাড়ু ঘরগুলোর অবস্থান বুঝতে পারেন। এগুলোকে বলা হয় টেকটাইল বোর্ড। কাঠের তৈরি বোর্ডের সাদা ও কালো রঙের ঘুঁটির মধ্যে পার্থক্য করা হয় তৈরির সময়। বোর্ডের মধ্যে উঁচু ও নিচু দুই ভাগে ঘর তৈরি করা হয়। নিচু বোর্ডে সাদা ঘুটি ও উঁচু বোর্ডে বসানো হয় কালোগুলো। ঘুঁটি চেনার জন্যও থাকে আলাদা চিহ্ন। সাদা ঘুঁটির মাথার উপরে আলপিনের মতো সামান্য উঁচু করা থাকে, যেটার ছোঁয়ায় একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ু সহজেই চিনতে পারেন ঘুঁটি। আর কালো ঘুঁটি থাকে মসৃণ। সাধারণত ভারত থেকে এই বোর্ড নিয়ে আসা হয়। তবে বাংলাদেশেও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে কিছু। কাঠের তৈরি এই বোর্ডের বাজারমূল্য ১ হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। বিদেশে ওক কাঠের বোর্ড প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে পারটেক্স বা কাঁঠাল, সেগুন কাঠ দিয়ে এগুলো তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ুদের নিয়ে প্রথম খেলা শুরু করেন ব্রেইল চেস সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হোসাইন ফারুক। সেটা ১৯৭৭ সালের ঘটনা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে নাজমুল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ভাইয়েরা যখন দাবা খেলতেন, আনন্দ করতেন, তিনিও তখন খেলতে চাইতেন। কিন্তু সাধারণ বোর্ডে তো আর খেলা সম্ভব না। কী আর করা? মনের দুঃখ মনে চেপে রাখতেন নাজমুল। পরে ১৯৮৮ সালে মিরপুরে দি স্যালভেশন আর্মির সহায়তায় নিজে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সঙ্গে দাবা খেলেন, নিজেও শেখাতেন অন্যদের। এরপর ১৯৮৯ সালে ব্যাপ্টিস্ট সংঘের কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সিনহা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

দুই বছর পর প্রথম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে নাজমুল একটি টুর্নামেন্ট করেন মিরপুরের রিক্রিয়েশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ুদের নিয়ে পথচলা সেই শুরু। এরপর সারা দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দাবাকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৯৭ সালে তোপখানা রোডে শিশুকল্যাণ পরিষদে আরেকটি টুর্নামেন্ট করেন। আর ১৯৯৮ সালে দাবা ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত হয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দাবা। ২০০২ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ ব্রেইল চেস সোসাইটি। সেই থেকে প্রতি বছরই সংগঠনটি নিয়মিত জাতীয় দাবার আয়োজন করে আসছে।

এখান থেকেই উঠে এসেছেন দেশের সেরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবাড়ু আজগর আলী, কামাল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, আবিদ হোসেন, মনির হোসেন, শামসুল ইসলামরা। পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন আজগর আলী দুঃখ করে বলছিলেন, ‘আমরা সেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাই না দাবায়। এ জন্য দেশের বাইরে কোনো টুর্নামেন্টে অংশও নিতে পারি না।’

এ বছরই স্পেনে আন্তর্জাতিক ব্রেইল চেস চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। আর্থিক সংকটের কারণে যাওয়া হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবা ফেডারেশন এরই মধ্যে পাঁচটি দাবার বোর্ড ও দুটি দাবার ঘড়ি দিয়েছে বাংলাদেশকে।

এই দাবাড়ুদের উত্সাহ দিতে নেই কোনো বড় অঙ্কের প্রাইজমানি। কারণটাও ওই একই—আর্থিক টানাপোড়েন। দাবাড়ুদের আক্ষেপ—নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান বা রানী হামিদদের মতো দাবাড়ুরা কেন একবারও খেলা দেখতে আসেন না। তাঁরা এলে পেতেন অনেক অনুপ্রেরণা।

ওদের অন্ধকার পৃথিবীতে খেলাটাই যে একমাত্র আনন্দ-আলো!