স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: রাজধানীর আশুলিয়ায় তোবা গ্রুপের তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন এবং চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনার প্রায় ৩ বছর পর বিচার কার্যশুরু হল।
বৃহস্পতিবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম কুদ্দুস জামান শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের ওই আদেশ দেন।
অভিযোগ গঠনের পর বিচারক আগামী ১ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) মামলাটিতে চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট টি এম আকবরসহ অন্যান্য আইনজীবীরা শুনানি করেন। তারা আসামিদের অব্যাহতি প্রার্থনা করলেও বিচারক তা নাকচ করে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন জেলা পিপি খোন্দকার আব্দুল মান্নান। গত ১৩ আগস্টও এ মামলার চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের প্রস্তুতি না থাকায় এবং তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
শুনানিকালে জামিনে থাকা আসামি দেলোয়ার হোসেন ও মাহমুদা আক্তার প্রাতষ্ঠানটির লোডার শামীম, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি সুপার ভাইজার আল আমিন, স্টোর ইসচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু ও অ্যাডমিন অফিসার দুলাল উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন পলাতক আসামিদের মধ্যে প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক পঞ্চাশ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
মামলাটির আসামি সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনোয়ারুল, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, প্রডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুর ও শহীদুজ্জামান দুলাল পলাতক রয়েছেন।
গত ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ওই ৬ আসামিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০৪-(ক) ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির পুলিশের ইন্সপেক্টর একেএম মহসীনুজ্জামন।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ওই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১১১ জন পোশাক শ্রমিককর্মী নির্মমভাবে নিহত হন। আহত হন ১০৪ জন শ্রমিক। গার্মেন্টসটিতে ১ হাজার ১শ’ ৬৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ৯৮৪ জন শ্রমিক সেখানে কর্মরত ছিলেন। নিহত ১১১ জনের মধ্যে তৃতীয় তলায় ৬৯ জন, চতুর্থ তলায় ২১ জন, পঞ্চম তলায় ১০ জন, পরবর্তীতে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান ১১ জন। লাশ সনাক্ত হওয়ায় ৫৮ জনকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকী ৫৩ জনের লাশ সনাক্ত না হওয়ায় তাদের অসনাক্ত অবস্থায় জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।