বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার মজনু অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ সময় সে বলেছে, তার টার্গেট ভুল ছিল। ঢাবি ছাত্রীকে সে ভবঘুরে ভেবে টার্গেট করে। পরে তাকে ধর্ষণ করে।
বৃহস্পতিবার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু সিদ্দিক। আদালতে মজনু বলেন, তার ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে সে ভবঘুরে মনে করেছিল।
জবানবন্দিতে মজনু অপরাধের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। সে জানায়, ধর্ষণের ঘটনায় একাই জড়িত ছিল। দীর্ঘদিন ধরে সে রেলস্টেশনে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ নারীদের ধর্ষণ করত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে এ ধরনের অপরাধ করে আসছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয় মজনু। রেলস্টেশন ঘিরে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় জানিয়েছে সে। ধর্ষণের বিষয়ে মজনু বলেছে, তার টার্গেট ভুল ছিল। সে ভেবেছিল, তার টার্গেট করা ওই নারী ভবঘুরে। পরে সে তার ভুল বুঝতে পারে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মজনু জানায়, ওইদিন কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে ওষুধ নিয়ে বের হয়ে কিছু দূর হাঁটার পর পরই ওই তরুণীর দিকে তার চোখ যায়। এর পর তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন শুরু করে। ধর্ষণ শেষে তরুণীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা চায় মজনু। পরে সে সটকে পড়ে।
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতাল এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন।
জানা যায়, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শেওড়ায় বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি ভুল করে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেন।
রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বাসায় ফেরার পর রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই ছাত্রীর বাবার করা মামলায় মজনুকে মঙ্গলবার গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের পর র্যা ব জানায়, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। মজনু আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল ঘটনাস্থলে। ঢাবি ছাত্রীকে জোরপূর্বক সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় সে। এর পর ঝোঁপের এক পাশে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। এর আগেও একই জায়গায় কয়েকজন নারীকে ধর্ষণ করে সে।
একই জায়গায় মজনু এ ধরনের অপরাধ করেছে। প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুকসহ বিভিন্ন নারীকে সে আটকে রেখে ধর্ষণ করত। তাদের হত্যার হুমকিও দিত। মজনু স্বীকার করেছে ঘটনার সময় সে একাই ছিল, ভিকটিমও তেমনই বলেছে।