বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
জাতীয় সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
রুল জারির নির্দেশনা অনুযায়ী, ওই রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল স্থগিতের আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সাতজনকে এতে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (৩) সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, (ক) মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে এবং (খ) মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে।’
‘সেহেতু সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন অসাংবিধানিক। সংসদ বহাল রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তা সংবিধানের ৬৬ (২) (চ) অনুচ্ছেদ এবং আরপিও এর ১২ ধারার পরিপন্থী।’
বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে। তবে, রিটর বিষয় কবে, কখন শুনানি হবে তা নিশ্চিত করেননি আইনজীবী।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সংসদে ৩০০ জন সদস্য আছেন। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আরও ৩০০ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। এতে করে সংসদে মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়াবে ৬০০ জন। যা সংবিধান সম্মত নয়।’
রিট আবেদন সম্পর্কে ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, সংবিধানের ৬৬নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যারা সরকারি পারিশ্রমিক নেয় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এবার সংসদ বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই সংসদের মন্ত্রী-এমপিরা পারিশ্রমিকও নিচ্ছেন। এ অবস্থায় তাদের সংবিধানে অংশ নেয়া সংবিধানবিরোধী।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ১২৩নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বচন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা না করে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা হচ্ছে। এতে করে নির্বাচনের পর দেশে দুটি সংসদ হয়ে যাবে। কিন্তু সংবিধানে একটি সংসদের কথা বলা আছে। এসব কারণ উল্লেখ করে রিট আবেদনটি করা হয়েছে।
এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ীও এটি বৈধ নয় বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চারদিনের মাথায় ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনঃতফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের ভোট। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর।