বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নে হাজার-হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকছে। এতে করে বাংলাদেশের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোই তার সরকারের মূল অগ্রাধিকার। মিয়ানমারকে বাংলাদেশের সমস্যা বুঝতে হবে। বাংলাদেশে অবস্থানরত সে দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।’
সামরিক শক্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না মন্তব্য করে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে।’
বন্যাসহ বাংলাদেশের নাগরিকদের নানা সমস্যা নিরসনে সরকারই হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে হাজার-হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা বাংলাদেশ সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো সন্ত্রাসী এদেশে ঢুকে যাচ্ছে কি না তা নিয়েও সরকারের মন্ত্রী সংশয় প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর)বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের স্রোত সামাল দেয়া বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে ওই এলাকায় ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রোহিঙ্গার স্রোতের সঙ্গে কত কিছু ঢুকে পড়েছে তা আমরা এখনও জানি না।
তিনি আরও বলেন, সরকার রোহিঙ্গার বিষয়টি মানবিকভাবে দেখছে। এখন সরকারের নীতি রোহিঙ্গা পুশিংয়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো। বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।
এদিকে মানবিক কারণে স্রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিলেও রোহিঙ্গাদের ঢল নামায় সরকার কিছুটা চিন্তিত। এ বিষয়ে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে দমন অভিযানের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামায় সরকার কিছুটা চিন্তিত ও ক্ষুব্ধ। এটা এমন একটা বিষয়, যেখানে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছি, রাখছিও। কিন্তু তাদের অত্যাচারী যে একটা মনোভাব এতদিন ধরে চলছে এবং যেখানে অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। শান্তির জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত অং সান সুচি, তিনিও এটাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। অত্যন্ত ঘৃণিত এই পদক্ষেপ।’