শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ট্রেড ইউনিয়নের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় শ্রমিক নেতারা

ট্রেড ইউনিয়নের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় শ্রমিক নেতারা

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা: শর্ত পূরণের পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপির (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) তালিকায় বাদ পড়েছে বাংলাদেশের নাম।

জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে শ্রমিক নিরাপত্তা ইস্যুতে যে ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়ে জোর দিয়েছিলো সরকার ও মালিকপক্ষ, সেই ইউনিয়নের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন শ্রমিক নেতারা।

তারা বলছেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজিডির পর বাংলাদেশের জিএসপির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ফের জিএসপি ফিরে পেতে বাংলাদেশকে ১৬টি শর্ত জুড়ে দেয়। এরমধ্যে একটি শর্ত ছিল ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের জুড়ে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে তোড়জোড় শুরু হয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত ট্রেড ইউনিয়নের এ সংখ্যা ছিল দেড়শ’, যা বর্তমানে তিনশ‘র বেশি।

এই ইস্যুটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে সরকার ও মালিকপক্ষ। তবে এখন যেহেতু জিএসপির কোনো প্রশ্ন আসছে না তাই ট্রেড ইউনিয়নের গুরুত্ব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বলেন, আগে যেহেতু জিএসপি’ ফিরে পেতে ট্রেড ইউনিয়ন একটি বড় ইস্যু ছিলো তাই সবাই এটিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু যখনই জিএসপি ইস্যু বাতিল হয়ে গেলো রাতারাতি যেন সব পরিবর্তন হয়ে গেছে।

এরমধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন করার ‘দায়ে’ আশিয়ান গার্মেন্টস থেকে অপারেটর জয় নামে এক শ্রমিককে চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

শ্রমিক নেতা তপন সাহা বলেন, এখন আর ট্রেড ইউনিয়ন বিষয়ে মালিক পক্ষও তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। অন্যথায় ট্রেড ইউনিয়নের ভবিষ্যত অন্ধকার। আর ট্রেড ইউনিয়ন মানেই শ্রমিকের অধিকার ও দাবি আদায়ের একটি আশ্রয়স্থল।’

তপন সাহার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছেন রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমীন।

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারের সাহায্য শ্রমিকদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’

লাভলী বলেন, ‘জিএসপি স্থগিতের পর দেশে প্রায় আড়াইশ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। আর তা হয়েছে ইউনিয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই। এখন জিএসপি ইস্যু না থাকায় ট্রেড ইউনিয়নের গুরুত্ব কিছুটা কমে যাবে এটা ঠিক।’

তবে শ্রমিকদের এ আশঙ্কার সঙ্গে এক মত নন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।

তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্প খাত জিএসপি পায় না, এটা ঠিক। জিএসপি আমাদের ইমেজের সঙ্গে জড়িত। জিএসপি না পেলেও আমাদের অন্য বাজার যেমন-ইউরোপ ও জার্মানির জন্য ট্রেড ইউনিয়ন খুবই গুরুত্বপূণ।

সুতরাং ট্রেড ইউনিয়নে নজর কখনই কমবে না। বরং তা আরও শক্তিশালী করা হবে বাজার ধরে রাখার জন্য।

‘কেউ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়লে এবং তা আমাদের জানালে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে,’ বলেন মাহমুদ হাসান খান।

২০১৩ সালে তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে ব্যাপক শ্রমিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ওই বছরের ২৭মে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।