শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > ট্রাম্প পদত্যাগ করবেন না অনাস্থায় পড়বেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে বাজি চরমে

ট্রাম্প পদত্যাগ করবেন না অনাস্থায় পড়বেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে বাজি চরমে

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
বেটিং সাইট প্যাডি পাওয়ারে অধিকাংশ জুয়াড়ির যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনাস্থায় পড়বেন। পদত্যাগের চেয়ে ট্রাম্পের অনাস্থায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই দেখছেন মার্কিন নাগরিকরা। আর নাগরিকরাই তাকে বাধ্য করবেন ক্ষমতার থেকে সরে দাঁড়াতে। ইতিমধ্যে তিনি তার একাধিক পরামর্শক কিংবা উপদেষ্টাদের বরখাস্ত করেছেন। অসংখ্য ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। প্যাডি পাওয়ারে তাই অধিকাংশ বাজিকররা বলছেন প্রথম মেয়াদেই ধরাশায়ী হবেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পকে নিয়ে যারা বাজি ধরছেন তারা বলছেন, কংগ্রেস থেকেই ‘ইউ আর ফায়ারড’ এমন অভিশংশনের বার্তা পাবেন তিনি। তিনি তার শাসনামলের প্রথম মেয়াদ শেষ করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম এই প্রেসিডেন্ট প্রথম মেয়াদ শেষ করতে পারবেন না এমন আশঙ্কা করা হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে। কিন্তু কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচ বা অনাস্থা আনবে? জুয়াড়িরা এও বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরাই তার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করবেন ও পদত্যাগে বাধ্য করবে।

সমালোচকরা ট্রাম্পকে নয়া নাজি ও শ্বেতাঙ্গ পরাক্রমশালীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হওয়ার অভিযোগ এনেছে। ভার্জিনিয়ার চার্লটসভিলে গত সপ্তাহে যে বিক্ষোভ ও সহিংসতা হয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রে যে রাজনৈতিক তৎপরতা প্রাণঘাতি হয়ে উঠেছে, তা সুষ্পষ্ট হয়েছে। এরই খেসারত হিসেবে এক নারীকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। একে কেউ কেউ অভ্যন্তরীণ বা গণতান্ত্রিক সন্ত্রাসও বলছেন। অর্থাৎ ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া ক্যাম্পাসে ওই সহিংসতার জন্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় পক্ষকে দোষারোপ করেছেন। কিন্তু সমালোচকরা ট্রাম্পের এধরনের উভয় পক্ষকে সমালোচনার বিষয়টি নৈতিক সমতার ধাপ্পাবাজি বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, নাজি সমর্থক ও এর বিরোধী শ্বেতাঙ্গ হাঙ্গামাকারীরা কখনো এক হতে পারে না।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ নিউচিন মনে করেন না যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে সব সমালোচনার ঝড় উঠেছে তার পুরোটাই সঠিক। যদিও স্টিভ নিউচিনের প্রাক্তন সহপাঠীরা তাকে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে পদত্যাগের আহবান জানিয়েছেন। তবে জুয়ার সাইট প্যাডি পাওয়ার ট্রাম্পের বর্তমান অবস্থাকে বুঝাতে ‘অসহ্য’ হিসেবেই বর্ণনা করেছে। এ সাইটটি ‘দি আর্ট অব দ্য ডিল’ বইটির লেখক টনি শাওয়ার্টস’এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, অন্তত ১৮ মাস ধরে তিনি ট্রাম্পকে ঘনিষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন ওই বইটি লেখার আগে। টনি শাওয়ার্টস মনে করেন ট্রাম্প পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। উত্তর কোরিয়ার মত বিভিন্ন সমস্যা ছায়া হয়ে ট্রাম্পের ওপর যে ধাক্কা দিচ্ছে তিনি তা সহ্য করতে পারবেন কি না তা দেখার বিষয়।

এমনিতে মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছেছে ।ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য ব্রকিং ইনস্টিটিউশনকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সিনেটের আর ছয়জন সদস্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই উচ্চকক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অপসারণে আর কোনো বাধা থাকবে না।

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী সিনেটে প্রেসিডেন্টের অপসারণের প্রস্তাব তখনই তোলা যাবে, যখন নিম্ন কক্ষ তথা প্রতিনিধি পরিষদ তার ইম্পিচের পক্ষে রায় দেবে। সেই প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্প চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। তবে এমন কোনো আশঙ্কার কথা বলা হয়নি দ্য ব্রকিং  ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে। তারা কেবলই সিনেটে ট্রাম্পের সমর্থন কমে আসার কথা জানিয়েছে।
মার্কিন সংবিধানের ১৯৬৭ সালে প্রণীত এক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যদি তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে তাকে অপসারণ করা যাবে। ইম্পিচমেন্ট প্রক্রিয়ার অধীনে, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটি প্রথমে শুনানি শুরু করবে। এরপর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে ইম্পিচ করার প্রশ্নে ভোট দেবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য প্রেসিডেন্টের ইম্পিচ করার পক্ষে থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবটি সিনেটে যাবে।