শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ট্রাম্পের মুসলিম বাতিলে দুইভাগে বিভক্ত আমেরিকা

ট্রাম্পের মুসলিম বাতিলে দুইভাগে বিভক্ত আমেরিকা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
সাতটি মুসলিম দেশের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার দেশের অর্ধেক নাগরিক এর সঙ্গে একমত। একই সঙ্গে প্রতি ৪ জন আমেরিকানের ১ জন নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেওয়ার পর রয়টার্স ও ইপসোর জরিপে এ তথ্য উঠে আসার পাশাপাশি নতুন এ প্রেসিডেন্টের আমলে মার্কিনীদের নিরাপত্তাহীনতা বোধ বাড়ছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে সারাবিশ্বে এমনকি ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভে বিক্ষুব্ধ হয়েছে মানুষ। সৌদি আরব ও ইসরায়েল ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো একের পর এক এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছে।
জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৯ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ট্রাম্পের অভিবাসী নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে অথবা কোনোভাবে সমর্থন করে। বাকি ৪১ ভাগ নাগরিক এ সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধী। অবশিষ্ট ১০ ভাগ নাগরিক বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানে না। রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেও এ নিয়ে চরম মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে।

ডেমোক্রেটদের মধ্যে ৫১ ভাগ ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ৫১ ভাগ ট্রাম্পের অভিবাসী নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রচ- বিরোধী। ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদানের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নির্বাচনী ইশতেহারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, দেশের অভিবাসী ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবেই এটা করা হয়েছে এবং তার এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও এর সীমান্তকে রক্ষা করবে। তিনি এও বলেছেন, তার এ সিদ্ধান্ত মুসলমান নিষিদ্ধের মত বিষয় নয়।

কিন্তু দেখা গেছে যারা বিমান পথে ভ্রমণে রয়েছেন, ওই সাতটি দেশের নাগরিক হলেই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্য দেশের বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে যাবার পথে আটক করা হয়েছে।

জরিপে আরো দেখা গেছে ৩১ ভাগ আমেরিকান মনে করছেন ট্রাম্পের মুসলিম অভিবাসী নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে তারা পুরোপুরি নিরাপদেই আছেন, ২৬ ভাগ মনে করছেন তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ে গেছেন। ৩৮ ভাগ মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্ত্রাস মোকাবেলায় একটি ভাল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। ৪১ ভাগ মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র একটি খারাপ নজীর স্থাপন করেছে। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের উভয়ই মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী অব্যাহতভাবে গ্রহণ করা উচিত। রিপাবলিকানদের চেয়ে এধারণ ডেমোক্রেটদের মধ্যে তিনগুন বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক মনে করেন না যে ট্রাম্পের মত অনুযায়ী খ্রিস্টান অভিবাসীদের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। নাগরিকদের মধ্যে ৫৬ ভাগ, ডেমোক্রেটদের ৭২ ভাগ ও রিপাবলিকানদের ৪৫ ভাগ মনে করেন না যে মুসলমানদের বাদ দিয়ে শুধু খ্রিস্টান অভিবাসীদের গ্রহণ করা উচিত।

ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির নেতা থেকে শুরু করে একাধিক আইনজীবী পর্যন্ত মুসলিম অভিবাসী নিষিদ্ধের তীব্র সমালোচনা করছেন। তারা বলছেন এধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি। বিভিন্ন প্রদেশের এটর্নি জেনারেলরা বলছে তারা একসঙ্গে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই শুরু করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অস্বীকার করায় ইতিমধ্যে এটর্নিজেনারেল শ্যালি ইয়েটসকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশেই রয়টার্স ও ইপসস ইংরেজিতে এধরনের অনলাইন জরিপ সম্পন্ন করে। জরিপে ১ হাজার ২০১ জন নাগরিক ছাড়াও ৪৫৩ ডেমোক্রেট ও ৪৭৮ জন রিপাবলিকান নেতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এর আগে ব্রিটেনে ট্রাম্পের এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে এক অনলাইন জরিপে মাত্র ১২ ঘন্টায় ৮ লক্ষাধিক মানুষ তীব্র প্রতিবাদ জানায় ও দেশটিতে ট্রাম্পের সফরের বিরোধিতা করে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর ব্রিটিশ রানির ভাবমূর্তি চরমভাবে বিঘিœত করবে। মিরর