জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ॥
ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রামীন ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশনে গ্রহক হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। অনেক স্থানে সিম নিবন্ধনের জন্য আদায় করা হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা করে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ শহরের সরকারী কেসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে কয়েকটি দোকানে চরম ভাবে গ্রহক হয়রানী করা হচ্ছে। গ্রমীন ফোনের এ সব ডিলাররা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। শনিবার কেসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে ঝিনাইদহ মোবাইল দোকানে “এখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রামীন ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশন করা হয়” সাইনবোর্ড দেখে গ্রাহকরা যান তাদের সিম নিবন্ধন করতে। সেখানে গেলে বলা হয় ফরম ফুরিয়ে গেছে। এর আগেও এই দোকান থেকে বলা হয়েছিল ফরম নেই। একই এলাকার মোবাইল হাউস নামের দোকানে গেলে বলা হয় কোম্পানীর লোক বাইরে গেছে। ভয়েস টেল নামের দোকানে গেলে কর্কশ সুরে জিজ্ঞাসা করা হয় কিসের সিম নিবন্ধন করবেন। গ্রামীন বলার সাথে সাথে জবাব আসে কাষ্টমার কেয়ারে যান। এখানে হয় না। তাহলে কেন সাইন বোর্ড ঝুলানো ? গ্রাহকদের এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দোকান মালিক কেনা বেচায় মন দেন। আসিফ মেরাজ নামে এক মোবাইল গ্রাহক বলেন, দোকানটিতে “এখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রামীন ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশন করা হয়” সাইনবোর্ড ঝুলছে দেখে আমরা সিম রেজিষ্ট্রেশন করতে আসি। কিন্তু তারা আমাদের কাজটি করে দেন নি। হামদহ বাসষ্ট্যান্ডের বাপ্পা ট্রেডার্সে গেলে বলা হয় লোক বাইরে গেছে, পরে আসুন। এ ভাবে শহরের দোকানগুলোতে চরম ভাবে গ্রাহক হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রামীন ফোনের গ্রাহকরা জরুরী কাজ ফেলে সিম নিবন্ধনের জন্য ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে গেছে তাদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে। গ্রামীন ফোনের প্রাধান কেন্দ্রে ভীড় এড়াতে মানুষ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রামীন ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশন করা হয় সাইনবোর্ড দেখে দোকানগুলোতে ভীড় করলেও সেখান থেকে কাংখিত সেবা পাচ্ছেন না। দোকানদাররা বলছেন, তাদের রেজিষ্ট্রেশন করতে কোন টাকা দিচ্ছে না। এ সময়ে তারা দোকানের কেনা বেচার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধনে রিটেইলাররা অর্থ নিলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে লাইসেন্স বাতিল করার হুঁশিয়ারি দেয়ার পরও টাকার বিনিময়ে শৈলকুপার বিভিন্ন জায়গায় চলছে টাকা নিয়ে সিম নিবন্ধন। শৈলকুপা উপজেলা শহর ও আলমডাঙ্গা বাজারে দেখা যায়, কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যে কোনো সিম/রিম নিবন্ধন ও পুনঃ নিবন্ধনে গ্রাহকের কাছ থেকে ১০/২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। আলমডাঙ্গা বাজারে সিম নিবন্ধন করতে আসা মাছুদ রানা অভিযোগ করে বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন ও পুনঃ নিবন্ধনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ না নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পরও এখানে গ্রামীণ সিম প্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছেন রিটেইলাররা। এছাড়া একটা সিম নিবন্ধনের পর নিবন্ধনের গ্রাহক কপির জন্য একাধিক বার রিটেইলারদের কাছে ঘুরতে হচ্ছে। এ বিষয়ে রিটেলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, রবি, সিটিসেল ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমিশন দেয়। বাংলালিংক দেয় ২ দশমিক ৮ শতাংশ, টেলিটক দেয় ৩ শতাংশ রাভ। প্রতিটি সিম নিবন্ধন করাতে ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগে, যা করাতে গিয়ে তাদের ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়। ব্যবসার ক্ষতি পূষিয়ে নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ঝিনাইদহের শৈলকুপার ভাটোই বাজারে সিম নিবন্ধনের জন্য আদায় করা হচ্ছে ১০/২০ টাকা পর্যন্ত। গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ভাটোই বাজারে রাজু বিপনী এন্ড টেলিকম নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক গোলাম রছুল ১০ টাকা ও ২০ টাকা নিয়ে সিম নিবন্ধনের জন্য টাকা নিচ্ছেন। কুলচারার গ্রামের মিলন, রকি, সাবিন, জুয়েলসহ অনেকের অভিযোগ সিম রেজিষ্ট্রেশনের জন্য জোর করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতবাদ করলে রেজিষ্ট্রেশন করা হচ্ছে না। দোকান মালিক গোলাম রসুল সাংবাদিককে বলেন, কিছু টাকা না নিলে দোকান চলবে কিভাবে ? এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ গ্রামীনের ডিষ্ট্রিবিউশন অপারেশ ম্যানেজারের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি।