শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > জেলায় জেলায় গণগ্রেপ্তার

জেলায় জেলায় গণগ্রেপ্তার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ জেলায় জেলায় যৌথবাহিনীর গণগ্রেপ্তার, সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে পঞ্চম দফা টানা ৮৩ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন। বগুড়া, দিনাজপুর, সিলেট, নাটোর, গাইবান্ধা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ অন্তত ১০ জেলায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। অভিযানের মধ্যেও ঝটিকা মিছিল, গাছের গুঁড়ি ফেলা রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ১৮দল নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অবরোধকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ’ শ’ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে পুলিশ। অভিযান চলাকালে ও পরে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বিরোধী নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে। বগুড়ার শাহজাহানপুরে অবরোধের সমর্থনে সমাবেশ চলাকালে অভিযান চালিয়ে ৬৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে র‌্যাব-পুলিশ। এছাড়া অবরোধ চলাকালে দিনাজপুরে ৪৯ জন, সিলেটে ৩২ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০ জন, গাজীপুর ও টঙ্গীতে ১৩ জন, শনিবার রাতে নাটোরে ১৪ জন ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-পুলিশ ও যৌথবাহিনী। নোয়াখালী জেলায় আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা ছাত্রদল। নাটোরে রেললাইনে আগুন, গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে সড়ক কেটে ও বাগেরহাটে সড়ক অবরোধ করেছে ১৮দল কর্মীরা। বগুড়ার শেরপুর থানায় কটকেল নিক্ষেপ ও ৭টি ট্রাকে আগুন এবং সিরাজগঞ্জে মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগ ও ট্রাক ভাঙচুর করেছে ১৮দল কর্মীরা। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমানের বাড়িতে পেট্রল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের কারণে প্রশাসন জারি করেছে ১৪৪ ধারা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালালবাজার ইউপি যুবলীগ আহ্বায়ক সোলায়মানকে পিটিয়েছে ১৮দল কর্মীরা। জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। কুমিল্লায় ১৪টি ও মানিকগঞ্জে ৪টি ককটেল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এদিকে বিএনপি দাবি করেছে, অবরোধকে কেন্দ্র করে যৌথ অভিযানে ও র‌্যাব-পুলিশ রাজধানীতে লালবাগ থানার স্বেচ্ছাসেবক দল সম্পাদক সফিউদ্দিন আহম্মেদ, ছাত্রদলের মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম সম্পাদক বাবু, লালবাগ থানার যুবদলের সভাপতি তাসাদ্দেক হোসেন বাবুলসহ রাজধানীতে ২০ জন, ফরিদপুরে সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল্লাহ সরকার বাবু, দিনাজপুরে ৪৯ জন, খুলনা জেলা ও মহানগরে ৩১ জন, নাটোরে ১৮ জন, গাইবান্ধায় ৯ জন, পঞ্চগড় ১১ জন, রাজবাড়ি ৯ জন, মাগুরায় ৭ জন, বগুড়া ৪ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, ঝিনাইদহে ৪ জনসহ সারা দেশে ৩৩৭ জন গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা ও ২৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যৌথবাহিনী, পুলিশের গুলি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় রাজধানীতে রাজধানীতে ৪৪ জন, দিনাজপুর ৫০ জন, নাটোরে ৫০ জন, খুলনা জেলা ও মহানগরে ৭০ জন, রাজবাড়িতে ১৯ জন, পঞ্চগড়ে ২০ জন, রাজশাহীতে ১০ জন, গাইবান্ধায় ১৫ জন, মাগুরায় ৭ জনসহ সারা দেশে গুলিবিদ্ধ এবং আহত হয়েছে ৪৮৮ জন নেতাকর্মী। অবরোধের দ্বিতীয় দিনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেছেন, চলমান গণআন্দোলন ঠেকাতে দেশের কয়েকটি জেলায় র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। যেখানে নারীরাও তাদের কুৎসিত ও লোলুপ থাবা থেকে নিস্তার পাচ্ছে না। যৌথবাহিনীর এই অভিযানে গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর ও লালমনিরহাটে ছয় নারী সহ ৫৫ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে মেহেরপুরের ইউপি সদস্য আলিহিন হোসেনের স্ত্রী কিসমত আরা সোহাগী, লতিফুন্নেসা, আসমা নুর খাতুন, হাফিজা খাতুনকে দুই বছর করে এবং অন্য ৪৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৮-৯ বছরের শিশু আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার, বিল্লাল হোসেন, আল আমিন হোসেন, শিপন, সাজিদুর রহমান ও হাফেজ মিজানুর রহমানকে আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী শারীরিক নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হয়নি, তাদেরকেও দুই বছর মেয়াদি কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। ইউপি সদস্য আলিহিন ও ১৮ দলীয় জোটের জাব্বারুলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের কারণে বাড়িতে শুধু পরিধেয় বস্ত্রই নয়, কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই। তিনি বলেন, শুক্রবার ভোরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ নলতা বাজারে মোড়ল স্টোরে ও শাহী বস্ত্রালয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় আগুন ধরিয়ে দিলে শাহী বস্ত্রালয়ের মালিক বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ সরদার দোকানে ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হন। এখন তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। সেখানে অন্তত ২০টি বাড়ি ও দোকানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ধ্বংস ও লুটের জেলায় পরিণত হয়েছে সাতক্ষীরা। সিরাজগঞ্জ নকলা এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় মসজিদের মাইকসহ মালামাল ভাঙচুর করে। এ সময় মসজিদে উপস্থিত সাধারণ মুসল্লিদেরও মারধর করে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাজশাহীতে বিএনপির সাবেক ও বর্তমান কমিশনারদের বাসায় যৌথবাহিনী হামলা ও তল্লাশি চালাচ্ছে। গাইবান্ধায় জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদুল হক রুবেলের বাড়িতে এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মীর মোজাম্মেল হোসেন মননের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করে সরকার দলীয় কর্মীরা। এদিকে গতকাল সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। লক্ষ্মীপুরে গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বরগুনা জেলা জামায়াতের আমীর আবু জাফর সালেহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিবাদে আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা জামায়াত।

রাজধানী চিত্র: অবরোধের দ্বিতীয় দিন রাজধানীতে বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্যে পুলিশের গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুর করেছে অবরোধ সমর্থকেরা। রমনা থানা জামায়াত-শিবির কর্মীরা সকাল আটটার দিকে মালিবাগ শহীদী মসজিদের কাছে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় তারা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সেখানে বেশ ক’রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে। দুর্বৃত্তরা কাওরান বাজার এলাকায় বেশ ক’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। উত্তরার আজমপুরে জামায়েত পরিচালনাধীন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই মিছিলের সঙ্গে যোগ দেয় উত্তরা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীর। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদেও ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিক্ষিপ্তকারীরা বেশ ৮-থেকে ১০টি যানবাহন ভাঙচুর করে। একই সময় সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রদল ও শিবিরের কর্মীরা। পূর্ব শাহজাহানপুর এলাকায় শিবির নেতা রাশেদুল হাসান রানার নেতৃত্বে সকালে একটি মিছিল থেকে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধে চেষ্টা করা হয়। লালবাগ থানা জামায়েত কর্মীরা আজিমপুরে মিছিল ও রাস্তায় পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও ককটেল বিস্ফোণ ঘটায়। মালিবাগ ওয়ারলেস মোড়, মগবাজার রেল গেট ও মতিঝিল এলাকায় তারা মিছিল করে। এদিকে সকাল থেকেই রাজধানীতে রিকশা, অটোরিকশাসহ হালকা যান চলাচল করলেও যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা ছিল খুবই কম। তিন প্রধান বাস টার্মিনাল গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে অল্প কিছু ট্রেন ও লঞ্চ ছেড়ে গেছে। ওদিকে নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি অলিগলিতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক র‌্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের। জলকামান ও রায়ট কার নিয়ে পুলিশ টহল দেয় রাজপথে।

এখনও সমঝোতা সম্ভব: বিএনপি

সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এখনও সমঝোতা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বলেছেন, সমঝোতার মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণে ১০ম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এমন কি সংবিধানের কোন সংশোধনী প্রয়োজন হলে তা-ও করা সম্ভব। কারণ সংসদ এখনও বহাল আছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানে সময়েরও কোন অভাব নেই। অভাব শুধু সরকারি সদিচ্ছার। আমরা সরকারকে এখনও বলবো- দেশ, দেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা এবং সমঝোতার মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণে ১০ম সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিন। অবরোধের দ্বিতীয় দিনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালযে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে তাদের কেড়ে নেয়া ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণের প্রতি এবং সংবিধানের প্রতি দায়িত্ব পালনের যে শপথ আপনারা নিয়েছেন-তা পূরণ করুন। দলীয় সরকার না হয়ে দেশের সরকার হোন। কৌশলে নয়-জনগণের সমর্থনে জনগণের প্রতিনিধি হওয়ার সম্মানজনক পথ ধরুন। নিজেরাও মর্যাদা নিয়ে বাঁচুন, জনগণকেও শান্তিতে বাঁচতে দিন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অর্থ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে দেশব্যাপী জনগণের আন্দোলন চলছে। রাষ্ট্রীয় সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের মালিকের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও বাহিনীসমূহকে ব্যবহার করছে সরকার। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করে তারা অবশিষ্টদের অধিকার অর্থহীন করে দিয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ জনকে বিজয়ী করার মাধ্যমে নির্বাচনী নাটকের প্রথম অংশ শেষ। আগামী ৫ই জানুয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বিতার নামে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ কিংবা পাতানো খেলা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। জনগণ এসব নাটক এবং খেলায় নেই। নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিরোধী দল নাকি এখন কপাল চাপড়াচ্ছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে বিরোধী দল যে অংশ নেবে না- এটা তো বহু আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। কাজেই বিরোধী দলের নির্বাচনে না যাওয়া কোন অতর্কিত কিংবা অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। স্বাভাবিক কোন ঘটনা নিয়ে কপাল চাপড়ানো স্বাভাবিক নয়। ঘটনা ইচ্ছানুরূপ না ঘটলে বরং কপাল চাপড়াতে হয়- যেমন ঘটছে ক্ষমতাসীনদের বেলায়। তিনি বলেন, ঘটনা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী না ঘটায় আজ দেশে-বিদেশে যে নিন্দার ঝড় উঠেছে- তার জন্য তো কপাল চাপড়ানোর কথা তাদের। নিজেদের অবস্থা অন্যদের বলে বর্ণনা করার হাস্যকর চেষ্টা কারও জন্যই মর্যাদাকর নয়। নজরুল ইসলাম খান বলেন, আন্দোলনকে দমানোর জন্য সরকার নির্বিচারে মানুষ মারছে, মহিলাসহ হাজারো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আহত করা হচ্ছে। ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মেহেরপুরের আলিহিনের মা থেকে শুরু করে কোলের শিশুরাও সরকারি নিপীড়নের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। অথচ জনগণের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়া হলে এসব কোন কিছুরই প্রয়োজন হতো না। জনগণের জানমাল, দেশের অর্থনীতি-সবই রক্ষা পেত। নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, বিএনপি’র দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব খাদ্যনালির মারাত্মক রোগে আক্রান্ত রিজভী আহমেদকে যে বিশেষ ধরনের খাবার খেতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন-তা তার বাড়ি থেকে সরবরাহ করতে দেয়া হচ্ছে না। তিনি সুচিকিৎসাও পাচ্ছেন না- পথ্য-ও পাচ্ছেন না ঠিকমতো। আমরা সুচিকিৎসার জন্য কেবিনে স্থানান্তর এবং বাড়ি থেকে সরবরাহ করা খাদ্য দিলে কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।

বগুড়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ৬৪ জন

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বন্দরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবরোধ ও সমাবেশ করার সময় ১৮ দলের ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। দুপুরে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট লাগোয়া মাঝিড়া বন্দর থেকে র‌্যাব পুলিশের যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। র‌্যাব-১২ বগুড়ার কমান্ডার মেজর মোসাদ্দেক ইবনে মুজিব জানান, আটককৃতরা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় গাড়ি পোড়ানো, ভাঙচুর, মহসড়ক অবরোধে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন- শাহজাহানপুর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাবেক খরনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, শেরপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জামায়াত নেতা গোলাম ইউনুস, মাঝিড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুস সোবাহান প্রমুখ।

দিনাজপুরে আটক ৪৯

দিনাজপুর থেকে জানান, যৌথবাহিনীর প্রথম সাঁড়াশি অভিযানে দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আটক করা হয়েছে ৪৯ জনকে। এর মধ্যে ১৫ জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আল রাজী যৌথবাহিনী’র অভিযান ও আটকের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে এ সময় কোন সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উদ্ধার হয়নি কোন আগ্নেয়াস্ত্র। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মুকুর চৌধুরীর দাবি করেছেন, আটককৃতরা অধিকাংশই ১৮ দলের নেতা-কর্মী। গ্রেপ্তার এড়াতে ১৮ দল নেতারা গাঢাকা দিলেও মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নাটোরে অভিযানে আটক ১৪

রোববার ভোর রাতে নাটোরে অভিযান চালিয়ে বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর থেকে ১৪ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এ সময় বেধড়ক মারধরে বড়াইগ্রাম উপজেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমেদ আহত হন। নাটোরের সহকারী পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) মাহফুজুজ্জামান আশরাফ বলেছেন, অবরোধের সময় গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।

গাইবান্ধায় অভিযানে ৫ মহিলাসহ আটক ১৮

উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি জানান, পলাশবাড়িতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাসে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে শনিবার রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৫ মহিলাসহ ১৮ দলের ১৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে। গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পলাশবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তারকৃতরা নাশকতা মুলক কাজ চালিয়ে আসছিলো।

সিরাজগঞ্জে নিষ্ফল অভিযান

সিরাজগঞ্জে জামায়াত-বিএনপি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। তবে ৪ ঘণ্টাব্যাপী নিষ্ফল অভিযানে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সদর ও কামারখন্দ উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রামে প্রথমবারের মতো যৌথবাহিনীর এ অভিযান পরিচালিত হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম ও গোলাম কিবরিয়া, বিজিবি’র মেজর আরিফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন ও র‌্যাব-১২’র কোম্পানি কমান্ডার এএসপি অশোক কুমার পালের নেতৃত্ব পরিচালিত এ অভিযানে প্রায় দেড়শতাধিক বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন। অভিযানের সময় নারী ও শিশুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও পুরুষদের এলাকায় দেখা যায়নি।

নোয়াখালীতে অভিযান আটক ৮ সোমবার হরতাল

নোয়াখালী থেকে জানান, নোয়াখালীতে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা ছাত্রদল। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দুপুরে নোয়াখালী জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে এ হরতালের ঘোষণা দেন জেলা ছাত্রদল। সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র হারুনুর রশিদ আজাদসহ বিএনপি ও ছাত্রদলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন। অপরদিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে জামায়াত শিবিরের ৮ কর্মীকে আটক করেছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।