স্পোর্টস ডেস্ক ॥
তানজিদ হাসান তামিম- জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে নামে যেমন মিল, তেমনি ব্যাটিংয়ের ধরনটাও মিলে যায় তামিমের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, দুজনই ব্যাট করেন বাঁ হাতে আর নিজেদের সেরা ছন্দে থাকলে প্রতিপক্ষ বোলিং লাইনআপকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে পছন্দ করেন দুজনই।
জাতীয় দলের তামিম প্রস্তুতি নিচ্ছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের জন্য আর জুনিয়র তামিম খেলছেন একই দলের বিপক্ষে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে। সিনিয়র তামিম কী করবেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে?- তা সময়ই বলে দেবে। তবে তার আগেই রোডেশিয়ানদের বোলিং আক্রমণকে ছাতু বানিয়েছেন জুনিয়র তামিম।
ম্যাচে তার যুব দলের সতীর্থদের বেশিরভাগই হতাশ করলেও, সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি তানজিদ হাসান তামিম।এমনিতে ওপেনার হলেও, এ ম্যাচে ব্যাটিং দেয়া হয়েছে ৬ নম্বরে। সেখানে নেমেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে মাত্র ৪০ বলে তুলে নিয়েছেন ঝড়ো ফিফটি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিসিবি একাদশের সংগ্রহ ৩৯ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৬১ রান। তামিম ৪২ বলে ৫৫ ও বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আলআমিন জুনিয়র ৪৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তারা এখনও পিছিয়ে ১৩০ রানে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচটিতে নেয়া হয়েছে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ৬ ক্রিকেটারকে। এদের মধ্যে রান পাননি অধিনায়ক আকবর আলী, বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় এবং মিডল অর্ডারে আস্থার প্রতীক শাহাদাত হোসেন দীপু। তবে দারুণ শুরু করেছিলেন একই দলের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
যার ফলে মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল বিসিবি একাদশ। ষষ্ঠ উইকেটে এরই মধ্যে আলআমিন ও তামিম মিলে মাত্র ১৪.৪ ওভারে যোগ করে ফেলেছেন ৯২ রান। যেখানে মূল অবদান তামিমেরই।
নিজের চেনা ওপেনিং পজিশন ছেড়ে ছয় নম্বরে নামলেও শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন তামিম। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৭ বলে একটি করে চার-ছয়ের মারে ১১ রান করেন তিনি।
বিরতি থেকে ফিরে হাঁকান আরও ৪টি ছক্কা, সঙ্গে ১টি চারের মারে মাত্র ৪০ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। তার মতোই ব্যক্তিগত ফিফটির দিকে এগুচ্ছেন আলআমিন জুনিয়রও। তার দরকার আর মাত্র দুই রান।
এর আগে যুবা দলের তিন ব্যাটসম্যান আকবর, জয় ও শাহাদাত মিলে সাকুল্যে করেছেন ৪ রান। মাহমুদুল জয় ১, শাহাদাত ২ ও আকবর আউট হয়েছেন ১ রান করে। তাদের তিনজনকেই নামানো হয়েছিল বিশ্বকাপে করা নিজেদের পজিশনেই।
তবে এক ইনিংসে রান পাননি বলেই যে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে হবে যুবা ক্রিকেটারদের- এমনটা কিন্তু নয়। মূলত এখন থেকেই শুরু হয়ে গেলো আকবর, জয়দের পরবর্তী ধাপে ওঠার প্রক্রিয়া। এতদিন ধরে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে যেভাবে পেয়েছেন সাফল্য, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি পরিশ্রম করেই ধরতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাফল্যের সোপান।
এদিকে আকবর, জয়, শাহাদাত রান না পেলেও, দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন এবং তানজিদ হাসান তামিম খেলেছেন স্বাভাবিকভাবেই। যদিও ওপেনার তামিমকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে ছয় নম্বরে। তবু মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন জিম্বাবুয়ের বোলিং অ্যাটাক।
ইনিংস সূচনা করতে মোহাম্মদ নাইম শেখের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল পারভেজ ইমনকে। বেশিদূর যেতে পারেননি নাইম। ইনিংসের প্রথম বলে ৪ মেরে শুরু করলেও তিনি আউট হয়ে গেছেন সপ্তম ওভারেই। চার্ল মুম্বার বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ১১ রান করেছেন বাঁহাতি নাইম।
অগ্রজ সঙ্গী আউট হয়ে গেলেও নির্ভিক চিত্তে খেলতে থাকেন ইমন। কিন্তু অপরপ্রান্তে দেখতে থাকেন যুব দলে তার সতীর্থদের আসা যাওয়া। তিন নম্বরে আসেন মাহমুদুল জয়, ফিরে যান ৫ বলে ১ রান। পরে চার নম্বরে নামেন শাহাদাত। তিনি বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলেও ২২ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
মাত্র ৩৯ রানে তিন ব্যাটসম্যান ফিরে চতুর্থ উইকেটে বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আলআমিন জুনিয়রের সঙ্গে ২৯ রানের ছোট জুটি গড়েন ওপেনার ইমন। তিনি আউট হন ২৪তম ওভারে। অফস্পিনার আইন্সলে দলুভুর বলে ক্যাচ দেন ভিক্টর নিয়ুচির হাতে। খেলেন ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৪ রানের ইনিংস।
এরপর উইকেটে আসেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর। তার স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র পাঁচ বল। এর মধ্যে নিজে ৩ বল খেলে ১ রান করতে সক্ষম হন। যুবা অধিনায়কের বিদায়ের পর আসেন সেই দলের ওপেনার তানজিদ তামিম।