স্টাফ রিপোর্টার ॥ জামায়াতে ইসলামীকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। এ ল্েয ইতিমধ্যে সরকারের প থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি দেশের কূটনীতিকের বাসভবনে আওয়ামী লীগের পে কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে জামায়াতের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে জামায়াতকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার আহবান জানান হয়। এ সময় জামায়াতের প থেকে যুদ্ধাপরাধ মামলা ছাড়া অন্যান্য মামলায় গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নেতা-কর্মীদের তালিকা দিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের কোন সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। জামায়াতের প্রায় চার হাজার নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী উপস্থিত ছিলেন। তবে সংশ্লিষ্ট দেশের কূটনীতিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
রাজধানীসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর এখন স্বাভাবিক ও প্রকাশ্য কোন রাজনীতি নেই। জামায়াতের কোন নেতা-কর্মীকেই এখন প্রকাশ্যে দেখা যায় না। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ঢাকা মহানগর কার্যালয় পুলিশ তালাবদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা পর্যায়ের এবং অন্যান্য মহানগরীর জামায়াত কার্যালয়ও বন্ধ। এ অবস্থায় জামায়াত নিজস্ব ওয়েব সাইটে এবং গণমাধ্যমসমূহের ই-মেইলে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং বিবৃতি দেয়। কিন্তু প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করতে না পারলেও হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার পর জামায়াতের নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে পড়ে।
প্রায় ২ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার শুরু হলে দলটির স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর একে একে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতার হন জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, নায়েবে আমীর মওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ, নায়েবে আমীর মওলানা আবদুস সোবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা ও এটিএম আযাহারুল ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী।
এদিকে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীর মধ্যে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে। ফলে দলটি প্রায় নিষিদ্ধ দল বা আন্ডারগ্রাউন্ড দলে পরিণত হয়। কিন্তু সরকারই এখন দলটিকে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চাইছে।