বৃহস্পতিবার , ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ব্যাহত হচ্ছে নির্বাচনী কাজ

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ব্যাহত হচ্ছে নির্বাচনী কাজ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গিয়ে ব্যাহত হচ্ছে নির্বাচনী কাজ। স্মার্টকার্ডের কাজের জন্য বর্তমানে বিষয়টি আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। এই অবস্থায় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না খুঁজলে সমস্যা আরো বাড়তে পারে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তারা মনে করছেন।

২০০৭ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের কর্মসূচি হাতে নেয় এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন সে সময়কার নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার বাই প্রোডাক্ট হিসেবে নাগরিকদের দেওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। এজন্য নির্বাচন কমিশন একটি অণুবিভাগও গঠন করে।

পরবর্তী সময়ে শামসুল হুদা কমিশন শুধু এনআইডি প্রকল্প হাতে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। তারা নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্যও আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয়। ফলে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের কাজের চাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। কিন্তু সে তুলনায় লোকবল অনেক কম।

ইসির উপজেলা বা থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সারাবছর ধরেই ভোটার তালিকা প্রণয়নের তথা নাগরিকদের ভোটার করে নেওয়ার কাজ চলে। এদিকে এনআইডি সংশোধন, স্থানান্তর, হারানো এনআইডি উত্তোলন ইত্যাদির জন্যও আসে শতশত আবেদন। এগুলোর জন্য আবার তদন্ত করতে হয়, শুনানি করতে হয়। এতে সারা মাসজুড়ে এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।

আবার প্রতিমাসেই কোনো না কোনো নির্বাচনী কাজ লেগেই থাকে। যেহেতু নির্বাচন অগ্রাধিকারমূলক বিষয়, তাই এনআইডি কাজও পেন্ডিং হয়ে যায়। এভাবে বাড়তে থাকে কাজের বোঝা। আবার আইনি জটিলতা বা মামলা সংক্রান্ত জটিলতাও মোকাবেল করতে হয়। অথচ এই সমগ্র কাজ করার জন্য মাঠ পর্যায়ে তথা উপজেলায় একজনমাত্র নির্বাচন কর্মকর্তা রয়েছেন। আর তার একার পক্ষে কোনোভাবেই এই কাজ সমাধান করা সম্ভব হয় না।

এই অবস্থায় কর্মকর্তারা বলছেন, এনআইডি বিভাগকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা দরকার। এজন্য আলাদা কর্মকর্তাও নিয়োগ দেওয়া দরকার। তা না করা হলে দিনকে দিন এ সমস্যা বাড়তেই থাকবে।

এদিকে এনআইডি’র কাজের সঙ্গে এবার নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কাজও যোগ হয়ে পড়েছে। কেননা, নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলেও এ এনআইডি নম্বরের প্রয়োজন হয়। আবার কোনো ইউনিয়নে বা যে কোনো নির্বাচন শুরু হলেই ভোটার এলাকা স্থানান্তরের অনেক আবেদন পড়ে। যারা প্রার্থী হওয়ার জন্যই ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চায়।ফলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকেই তখন এনআইডি সংশোধন বা স্থানান্তরের কাজটিও জরুরি ভিত্তিতেই দেখতে হয়। তাই এ সমস্যার একটা সমাধান দরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এনআইডিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারলে ভালো হয়। কিন্তু এখনই চাইলেও তা করা সম্ভব হবে না। এজন্যও সময়ের প্রয়োজন।তবে উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা আরো বাড়ানো যেতে পারে। এতে সমস্যা কিছুটা কমে আসবে।
এসব বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এনআইডি শাখা আলাদা করা বিষয়ে কিংবা অধিদফতরের যে সব আলোচনা শোনা যাচ্ছে, তা উচ্চাভিলাষী আলোচনা। তবে একথা সত্য, যদি সরকার এনআইডির সঙ্গে ভবিষ্যতে অন্য কোনো সেবা অন্তর্ভূক্ত করতে চায়, তবে তখন এটা আলাদা হতে পারে। কিন্তু এখন যে অবস্থায় আছে, এতে তো কোনো সমস্যা নেই। একথা সত্য যে, উপজেলা কর্মকর্তাদের কাজের চাপ বেশি। কিন্তু সীমিত সম্পদের সঠিক ব্যবহার তো করতেই হবে।

এদিকে এখনো দেশের ৫০টির বেশি উপজেলায় নির্বাচন কর্মকর্তা নেই। এক্ষেত্রে এক উপজেলা কর্মকর্তাকে পাশের উপজেলার কাজও করতে হয়।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, আমরা শিগগিরই পিএসসির মাধ্যমে যেসব উপজেলায় কর্মকর্তা নেই, সেখানে কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যবস্থা নিচ্ছি। বাংলানিউজ