রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > জলবায়ু পরিবর্তনে লাভবান হবে যারা

জলবায়ু পরিবর্তনে লাভবান হবে যারা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ জলবায়ু পরিবর্তন প্রায় নিয়ন্ত্রণ অযোগ্য একটি বিপর্যয়ে পরিণত হতে চলেছে। শিল্পোন্নত বিশ্ব সবুজ জ্বালানির দিকে না ঝুঁকে বরং নানা প্রচারণার মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের শিল্পোদ্যোগকেই বাধাগ্রস্ত করছে। তবে এটা সবাই মানে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবাই। এর ফলে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে তা উন্নত বা অনুন্নত দুনিয়া এবং জীব প্রজাতি বাছবিচার করবে না।

কিন্তু তারপরও কিছু প্রজাতি লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষ ও অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণীদের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের এ ধারা চলতে থাকলে খাদ্যশস্যসহ সব ধরনের ফসলে পুষ্টিগুণ কমে যাবে। আর লাভবান হবে অপ্রয়োজনীয় আগাছা, পোকামাকড়, পেস্ট জাতীয় প্রাণী।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ দাবি করছেন। তাদের ‘ন্যাশনাল ক্লাইমেট অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। তারা বলছেন, এর মূল কারণ হলো- কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ, তাপমাত্রার বিপজ্জনক ঊর্ধ্বগতি এবং চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে সব প্রজাতির উদ্ভিদ, পোকামাকড় ও মাটির পুষ্টিগুণ সমানভাবে প্রভাবিত হয় না। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এই নেতিবাচক পরিবর্তনের ফলে লাভবান হবে আগাছা জাতীয় উদ্ভিদই। খাদ্যশস্য খেয়ে বাঁচে এমন প্রজাতির পোকা ও পেস্টও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। আর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্ভাবনার মধ্যে আছে মানব প্রজাতি।

আরো ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, এসব আগাছা ও পোকার সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে দুই ধাপে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে। পোকা দমন করতে গিয়ে কীটনাশকের ব্যবহার বাড়বে। আর ফসলে বেশি পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহার করতে গিয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। সেই সঙ্গে মাটি, খাদ্য ও পানি দূষিত হবে ভয়াবহ রকম।

হার্ভার্ড বিজ্ঞানীরা আরো বলছেন, এই বিষাক্ত রাসায়নিক কৃষক, কৃষিশ্রমিক এবং ভোক্তাদের স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

এদিকে গত বুধবার ন্যাচার সাময়িকীতে প্রকাশিত আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্বন ডাই অক্সাইড অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে আরেক ধরনের জনস্বাস্থ্য হুমকি দেখা দেবে। ধান, গম এবং সয়াবিনের মতো ফসলে পুষ্টিগুণ অত্যন্ত কমে যাবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুষ্টিউপাদান শুধু কমে যাবে তা নয় অত্যন্ত দরকারি কিছু পুষ্টিউপাদান যেমন: জিঙ্ক, লোহা এবং আমিষ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাবে।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে মানব ইতিহাসে বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এই কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে সূর্য রশ্মির সহায়তায় সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে উদ্ভিদ। তবে এ প্রক্রিয়াতে সব প্রজাতির উদ্ভিদ সমান দক্ষ নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন,কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের প্রতিযোগিতায় খাদ্যশস্যকে হটিয়ে দেবে আগাছা।