স্টাফ রিপোর্টার ॥ শ্রমিক অধ্যূষিত গাজীপুর সদর উপজেলার কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের আয়োজনে প্রতিদিন প্রকাশ্যে চলছে হাউজি, ওয়ান-টেন, ওয়ান এইট, চরকি, ডাইস, হাতিঘোড়া, পটসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়ার আসর। তাছাড়া রাত ১টার পর থেকে চলছে যুবতী নারীদের উলঙ্গ নৃত্য। টিকিটের মূল্য ১০০, ২০০ ও ৩০০ টাকা।
হাউজি খেলার ঘরটি টিনের ছাপড়া দিয়ে ঘেরা। উপরে কাপড়ের সামিয়ানা টানানো। হাউজি ও অন্যান্য খেলা শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১টার পর্যন্ত। তারপর থেকে হাউজি খেলার ঘরেই স্টেইজ তৈরি করা জায়গায় শুরু হয় যুবতী নারীদের উলঙ্গ নৃত্য। এ নৃত্য চলে ভোররাত পর্যন্ত।
এগুলো পরিচালনার দায়িত্বে আছেন স্থানীয় কমিশনাররের ভাই কাউছার এবং আবরার নামে দু’ব্যক্তি।
প্রতিদিন বিভিন্ন ইভেন্টে আয় হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রতিরাতে বিভিন্ন স্থানে বখড়া দিতে হয় প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। মাঠের পরিচালক আবরার জানান, জয়দেবপুর থানাকে প্রতিরাত দিতে হয় ৩৬ হাজার, ডিসি অফিসকে দিতে হয় ২০ হাজার, স্থানীয় ফাঁড়িপুলিশকে দিতে হয় ১০ হাজার, তাছাড়া ডিবি, ডিএসবি অফিস, মাঠ কমিটি, সাংবাদিক, স্থানীয় বিভিন্ন ক্লাব ও মাস্তানদের এ আয় থেকে বখড়া দিতে হয়। এ স্থানটি ঘিরে প্রতিরাতে এখানে অপরাধীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, সাভার আশেপাশের জেলা ও থানা এলাকা থেকে বাসে, প্রাইভেটকার দিয়ে নামী-দামী জুয়াড়িরা আসছে। এছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার সাধারণ মানুষ আসছেন দলে দলে উক্ত মাঠে জুয়া খেলতে। প্রতিদিন রাতে জুয়ার আসরে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
জুয়া ও যুবতী নারীদের উলঙ্গ নৃত্যে নেশায় নিমজ্জীত স্থানীয় তরুণ সমাজ।
একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারী দলের কতিপয় নেতা-কর্মীদের ম্যানেজ করে এ জুয়ার আসর চালাচ্ছে। এ হাউজি খেলায় নাম ভাঙ্গানো হচ্ছে দেশের সূর্য্য সন্তান হিসেবে খ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম।
জুয়া হাউজির প্রভাবে এলাকায় বেড়ে গেছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মত অপরাধ প্রবণতা।
এলাকার সাধারণ মানুষ হাউজি ও নারী নৃত্য বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।